রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- কিছুদিন আগেই খুন হয়েছিলেন মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে এবার সরকারি রাস্তার উদ্বোধনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন দুই তৃণমূল নেতা। গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন আরও এক তৃণমূল কর্মী। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচক-১ ব্লকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
মালদার তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের খুনের ১২ দিনের মাথায় ফের এলোপাথাড়ি গুলি চলল এবার কালিয়াচকে। সেই গুলিতে মৃত্যু হয়েছে শেখ হাসান নামে এক তৃণমূল কর্মীর। গুলিবিদ্ধ হন অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিতে জখম হয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এসারুদ্দিন শেখ সহ আরও কয়েকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে কালিয়াচক-১ ব্লকের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতর নয়া বস্তি এলাকায় নিকাশি এবং রাস্তা উদ্বোধনের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন কালিয়াচক এক নম্বর ব্লকের নওদা যদুপুর এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ। অভিযোগ, সে সময় আচমকাই কয়েক জন দুষ্কৃতী হামলা চালায় বকুলের উপর। গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তাতে পড়ে যান তিনি। আহত হন আরও কয়েক জন।
ঘটনায় আহতরাও তৃণমূলেই স্থানীয় এক নেতা জাকির শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ, জাকিরের নেতৃত্বেই তৃণমূলেরই আরেক গোষ্ঠী হাসুয়া, লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় ওই অনুষ্ঠানে। এদিন মালদা মেডিকেলে জখম তৃণমূল নেতা এসারুদ্দিন জানান, ‘যারা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সবাই তৃণমূলেরই৷’ সম্প্রতি কংগ্রেস থেকে তাঁদের দলে যোগ দিয়েছিল৷ স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘রাস্তা আর ড্রেনের কাজের টেন্ডার নিয়ে একজন পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। তার জেরেই বিপক্ষ গোষ্ঠী তাঁদের উপর গুলি চালিয়েছে৷ বকুল আর এসারুদ্দিনের মাথায় গুলি লেগেছে৷’ গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্তে নেমেছে কালিয়াচক থানার পুলিশ৷
এই প্রসঙ্গে ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই নিয়ে এখনই কিছু বলব না। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। মুখ্যমন্ত্রী যদি ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করেন অবশ্যই জানাব।’’ তবে আচমকা এই হামলার কারণ কী? কারা হামলা চালাল, তা জানা যায়নি এখনও। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, নতুন বছরের শুরুর দ্বিতীয় দিনেই ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের কারখানার কাছেই খুন হন তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে তৃণমূল নেতা তথা দলের মালদহ শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে। পরে তৃণমূল নরেন্দ্রনাথকে দল থেকে বহিষ্কার করে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার আবার মালদহে চলল গুলি।
Be the first to comment