নিছক চাষ নয়। আধ্যাত্মিক কৃষিকার্য। বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে চাষ করতে হবে কৃষককে। মানতে হবে প্রাচীন পুঁথিতে লেখা আরও অনেক নিয়মকানুন। তা হলেই আরও বেশি ফসল উৎপন্ন হবে। তার মানও হবে আগের চেয়ে ভালো। চাষিদের এমনই পরামর্শ দিচ্ছে গোয়া সরকার।
রাজ্যের কৃষি মন্ত্রকের এক অফিসার জানিয়েছেন, চাষের সময় মোট ২০ দিন ধরে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে। কৃষিমন্ত্রী বিজয় সরদেশাই এবং তাঁর মন্ত্রকের ডায়রেক্টর নেলসন ফিগুইরেডো সম্প্রতি গুরগাঁওতে গুরু শিবানন্দ আশ্রমে গিয়েছিলেন। ওই সংগঠনটি বৈদিক কৃষির কথা প্রচার করে। মন্ত্রী নিজের চোখে দেখে এসেছেন, কীভাবে আধ্যাত্মিক কৃষি চাষিদের উপকারে আসতে পারে ।
ফিগুইরেডো বলেন, কৃষি মন্ত্রক জৈব ও পরিবেশ বান্ধব চাষ চালু করতে চায়। যাঁরা আধ্যাত্মিক চাষে বিশ্বাস করেন, তাঁদের সঙ্গে রাজ্য সরকার কথা বলছে। শিব যোগ ফাউন্ডেশনের নির্দেশ অনুযায়ী চাষিদের বৈদিক চাষের গুরুত্ব বুঝিয়ে বলা হচ্ছে। ব্রহ্মকুমারীরা বলেছেন, এখনও পর্যন্ত এক হাজার কৃষক বৈদিক চাষ করেছেন। উপকারও পেয়েছেন যথেষ্ট।
কাকে বলে বৈদিক চাষ?
ফিগুইরেডো বলেছেন, চাষের সময় ২০ দিন ধরে রোজ ২০ মিনিট বৈদিক মন্ত্র বলতে হবে। যাঁরা বৈদিক চাষে বিশ্বাসী, তাঁরা বলেন, ওই মন্ত্রের শক্তিতে মহাবিশ্বের শক্তি আকর্ষিত হবে ওই কৃষিক্ষেত্রের দিকে। ফলে প্রতিটি বীজ অঙ্কুরিত হয়ে উঠবে। ফসলের মানও হবে উন্নত। আমাদের রাজ্যের পরিবেশ রক্ষার কথা ভেবে জৈব চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। চাষে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে বলা হয়েছে। জৈব চাষে সারা বিশ্বকে পথ দেখাবে ভারত। গোয়াও সেক্ষেত্রে বড় অবদান রাখবে। আমরা চাষিদের শেখাচ্ছি, কীভাবে কম খরচে এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে চাষ করতে হয়।
চলতি বছরের শুরুতেই ফিগুইরেডো বলেছিলেন, চাষিরা যদি বৈদিক পদ্ধতিতে চাষ করে তাহলে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আধ্যাত্মিক চাষে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। এভাবে যে ফসল উৎপন্ন হয়, তা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল সূত্রে জানা যায়, বৈদিক চাষ হয় জ্যোতিষ মেনে। বীজ রোপণ ও ফসল কাটা হয় আকাশে গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান লক্ষ করে। প্রাচীন বৈদিক পুঁথিতে বলা আছে, শস্যক্ষেত্রের আকৃতি ও আয়তন কেমন হবে। অনেকের ধারণা, এযুগে প্রাচীন রীতিনীতি মেনে কাজ করা খুবই কঠিন। গোয়া সরকার তাতে কতদূর সফল হবে সন্দেহ আছে।
Be the first to comment