মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পরও রাজ্যকে কোন কিছু না জানিয়েই মধ্যরাতে ‘একতরফা’ সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস। এই ঘটনায় রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত আরও চরমে পৌঁছলো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজভবনের পক্ষে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য হিসাবে অধ্যাপক কাজল দে-কে নিয়োগ করছেন। রাজ্যপাল নিয়োগনামায় সই করছেন, তেমন একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।
রাজভবন ও বিকাশ ভবনের দ্বন্দ্ব দীর্ঘ সময় ধরে চললেও সম্প্রতি তা বড় আকার নেয়। গত ৩১ অগস্ট রাজ্যপাল ঘোষণা করেছিলেন, নতুন করে অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত আচার্য হিসাবে তিনি নিজেই রাজ্যের ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতিকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তর জলঘোলাও হয়। এমনকি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাফ জানান, কোন অধিকারে রাজ্যপাল এমনটা করতে পারেন? এর বিরোধিতায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপরই রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না-করে রবিবার রাতে ওই ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কল্যাণী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেলগাছিয়ার পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের মনোনয়ন করেন রাজ্যপাল। সোমবার তাঁদের নিয়োগ করা হয়।
এর আগে, গত ২ সেপ্টেম্বর রাজভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছিল, আচার্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সার্বভৌম অধিকর্তা হলেন উপাচার্যই। তাঁর অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা আচার্যের নির্দেশ মেনেই কাজ করবেন। সরকার তাঁদের নির্দেশ দিতেই পারে। কিন্তু সেই নির্দেশ তাঁরা মানতে বাধ্য নন।এই ঘটনায় রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
যখন রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে, তখন রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বৈঠকে ডেকেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টোয় বিকাশ ভবনে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রেজিস্টারদের সঙ্গে ব্রাত্য আলোচনা করবেন বলে খবর।এই আবহেই আবারও মঙ্গলবার মধ্যরাতে ফের রাজ্যপাল বোস নতুন উপাচার্য নিয়োগ করে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত আরও চরমে তুললেন।
Be the first to comment