মধ্যরাতের সাসপেন্স ভাঙলেন, ২টি কনফিডেন্সিয়াল চিঠিতে সই রাজ্যপালের

Spread the love

শনিবারই জানিয়ে দিয়েছিলেন “অপেক্ষা করুন। দেখুন আজ মধ্যরাতে কী পদক্ষেপ নিই।” সেই কথামতো শনিবার মধ্যরাতেই দুটি কনফিডেন্সিয়াল চিঠিতে সই করলেন রাজ্যপাল। সেই চিঠি দুটির একটি পাঠাচ্ছেন নবান্নতে। এবং অন্যটি পাঠাচ্ছেন দিল্লিতে।

ওই দুঠি গোপনীয় চিঠি সিল খামে তিনি পাঠাচ্ছেন। রাজভবন থেকে এনিয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা না হলেও বেশ কয়েকটি বিষয় ওই চিঠিতে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি বিষয় থাকার সম্ভাবনার কথা এখনওপর্যন্ত স্পষ্ট হচ্ছে। সেটি হল রাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত টানাপোড়েন। রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বারেবারেই রাজ্যপালের সমালোচনা করেছেন। সেক্ষেত্রে এনিয়ে রাজ্যের অবস্থানের বিষয়টি তাঁর চিঠিতে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি থাকছে রাজ্যপালের নিজের বক্তব্য। এদিকে, জানা যাচ্ছে যে চিঠি নবান্নতে রাজ্যপাল পাঠিয়েছেন তা মুখ্যমন্ত্রীকেই লেখা হয়েছে। ওই চিঠিতে রাজ্যে বর্তমানে শিক্ষা নিয়ে যা চলছে সেটাই লেখা হয়েছে বলে খবর।

এনিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, প্রথমত এটা প্রমাণ হচ্ছে তিনি কোনও কাজ দিনের বেলা করতে পছন্দ করেন না। তাঁর সব কাজই দেখছি রাতের বেলা। আর রাতের বেলা কারা কী ধরনের কাজ করেন তা আমরা জানি। দ্বিতীয়ত তিনি বিজেপিকে খুশি করার জন্য এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে অনেকদিন ধরেই কাজ করছেন। রাজ্যের নির্বাচিত সরকার, শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সহযোগিতা তো দূরের কথা প্রতিটি বিষয় নিয়ে রাজ্যকে তিনি বিব্রত করছেন। সমান্তরাল প্রশাসন চালিয়ে বিজেপিকে খুশি করে জগদীপ ধনখড়ের মতো নম্বর বাড়াতে চাইছেন যাতে ভবিষ্যতে কিছু পাওয়া যায়। এটা করতে গিয়ে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে রসাতলে পাঠানোর চেষ্টা করছেন। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।

অন্যদিকে, এনিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, দেখুন ভূত তাড়ানোর জন্য রাতই ভালো সময়। যেভাবে শিক্ষার মানকে নষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল তাতে রাজ্যপাল শপথ নিয়েছেন তিনি দুর্নীতির জালকে নষ্ট করে দেবেন। তাই রাজ্যপাল দিনে রাতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, গতকালই উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালকে নিশানা করেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বসু মন্তব্য করেন, “ভেবেছিলাম উনি খিলজি, কিন্তু আদতে দেখছি উনি মহম্মদ বিন তুঘলক।” কাল রেজিস্ট্রার বৈঠকের পর ব্রাত্যর এই মন্তব্যে নতুন করে জলঘোলা হয়। যে মন্তব্যেই কড়া অবস্থান রাজ্যপালের। আসরে নেমে এবার মধ্যরাতে ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি রাজ্যপালের। ‘দেখুন আজ কী করি!’ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন বোস।

একইসঙ্গে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস তাঁর উপাচার্য নিয়োগের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ক্ষুব্ধ হওয়ার প্রসঙ্গেও তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্যের নিয়োগ নিয়ে ভাবিত। কারও অসন্তোষ নিয়ে নয়।’ এদিকে রাজ্যপাল যখন তাঁর ‘বিন তুঘলক’ মন্তব্যের জন্য মধ্যরাতে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তখন নাম না করে একটি টুইট করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যে টুইটে কারও নাম না থাকলেও, ওয়াকিবহল মহলের মতে এই টুইটের নিশানা রাজ্যপালকেই করা হয়েছে! ব্রাত্য লিখেছেন, ‘মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় দেখতে থাকুন। সাবধান! সাবধান! সাবধান! শহরে নতুন ভ্যাম্পায়ার এসেছে। শহরবাসী আপনারা সতর্ক থাকুন। নিজেদেরকে সাবধানে রাখুন। অধীর আগ্রহে ভারতীয় পুরাণ অনুযায়ী রাক্ষস প্রহরের জন্য অপেক্ষা করছি।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*