গ্রেট ওয়াল অফ চায়না।’ মানুষের তৈরি অন্যতম বড় স্থাপত্য। কোরিয়ার সীমান্ত থেকে গোবি মরুভূমি। প্রায় ২ হাজার বছর আগে তৈরি ২১ হাজার ১৯৬ কিলোমিটার লম্বা পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের এক আশ্চর্য এই চিনের প্রাচীর কি ভেঙে পড়ছে?
হ্যাঁ। সম্প্রতি কিছু পরীক্ষায় এমনটাই ধরা পড়েছে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের গবেষণা অনুযায়ী, এই প্রাচীর যেহেতু একই সময়কালে তৈরি হয়নি, তাই এর মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়। গবেষকদের মতে, চিনের প্রাচীরকে সবাই ভাবেন একটা একক প্রাচীর। কিন্তু আসলে তা নয়। এই প্রাচীর চিনের ১১ টি বংশের রাজত্বকালে তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে কিন, হান ও মিং, এই তিন বংশের রাজত্বকালেই তৈরি হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার লম্বা প্রাচীর। আর তাই বিভিন্ন বংশের রীতি আলাদা থাকায় আসলে প্রাচীরের বিভিন্ন অংশের যেমন বয়সে ফারাক, তেমনই ফারাক শিল্পরীতিতে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রাচীরের প্রায় ৩০ শতাংশ অংশে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিদ জন্মেছে। দর্শকদের জন্য এই প্রাচীর খোলা থাকলেও এর বেশ কিছু অংশে কেউ যেতে পারেন না। এতটাই দুর্গম সেই সব এলাকা। আর এইসব দুর্গম এলাকাতে নজর রাখাও সব সময় সম্ভব হয় না। তাই এই অঞ্চলগুলোতে প্রাচীরের মধ্যে ফাটল দেখা গেছে।
কিন্তু গোটা প্রাচীরের উপর কীভাবে চালানো যাবে নজরদারি। তার জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। এক চিনা পত্রিকার খবর অনুযায়ী প্রাচীরের উপর নজর রাখার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ইনটেলের ফ্যালকন ৮+ ড্রোন। মূলত বেজিংয়ের ৫০ মাইল উত্তরে জিয়ানকাউ এলাকায় নজর রাখার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে এই ড্রোন। প্রাচীরের এই অংশটি মিং বংশের রাজত্বকালে তৈরি হয়েছে।
এই ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে যেখানে যেখানে নতুন করে প্রাচীরের সংস্কার প্রয়োজন, তা করা হবে বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন সরকার। তবে এই কাজ কিন্তু সহজ নয়। ঝাও পেং নামের এক বিখ্যাত স্থপতি জানিয়েছেন, ” প্রাচীরের বিভিন্ন অংশ খুব বাজে অবস্থায় রয়েছে। এর সংস্কার প্রয়োজন। তবে ড্রোন ব্যবহার করে আমরা হয়তো প্রাচীরের দৈর্ঘ্য বা মাটির উঁচু-নীচু পরীক্ষা করতে পারব, কিন্তু প্রাচীরের বিভিন্ন অংশের ডিজাইন, নির্মাণে ব্যবহৃত সামগ্রী বা চুনের প্রকৃতি নির্ধারণ করা খুব কঠিন কাজ।”
Be the first to comment