উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দুর্নীতিতে নাম জড়াল শিক্ষাদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর। অভিযোগ, মেধা তালিকায় না থেকেও মন্ত্রীর মেয়ে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। তাই মঙ্গলবারই রাত ৮টার মধ্যে পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি মেখলিগঞ্জের বিধায়ককে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছে আদালত।
২০১৬ সালের এসএলএসটি অর্থাৎ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ববিতা বর্মন নামে এক পরীক্ষার্থী মামলা করেছিলেন। তাঁর দাবি, ওয়েটিং লিস্টে ২০ নম্বরে নাম ছিল তাঁর। কয়েকদিন পর দেখা যায় ওয়েটিং লিস্টের ২১ নম্বরে নাম চলে গিয়েছে তাঁর। ১ নম্বরে উঠে এসেছে মন্ত্রীর মেয়ের নাম। ববিতার দাবি, তাঁর চেয়ে নম্বর কম ছিল মন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। তার পরেও নিয়োগপত্র হাতে পাননি ববিতা। অথচ ২০১৮ সালের মেখলিগঞ্জের একটি স্কুলে চাকরি করছেন অঙ্কিতা। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন চাকরিপ্রার্থী ববিতা।
এদিনের শুনানিতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেখা যায়, পার্সোনালিটি টেস্টে অংশই নেননি মন্ত্রীকন্যা। কারণ, পার্সোনালিটি টেস্টে কত নম্বর পেয়েছিলেন অঙ্কিতা, তার কোনও রেকর্ড নেই এসএসসির কাছে। এরপরই তড়িঘড়ি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আদালতের নির্দেশনামা হাতে পাওয়ামাত্র বিশেষ দল গঠন করে তদন্ত শুরু করতে হবে সিবিআইকে। আজ রাত ৮টার মধ্যে মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে হবে। আদালতের নির্দেশ, যে কোনওরকম প্রভাবমুক্ত হয়ে তদন্ত করতে হবে সিবিআইকে।
শুধু সিবিআই তদন্ত নয়, মন্ত্রিত্ব থেকে পরেশ অধিকারীকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশও করেছে আদালত। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে করা সুপারিশকে নির্দেশ হিসেবে গণ্য করতে নিষেধ করেছেন বিচারপতি। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ৭ জুনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ জুলাই।
Be the first to comment