রোজদিন ডেস্ক,কলকাতা:– একবছর আগে সন্দেশখালির আন্দোলনে টাকার খেলা হয়েছিল। সোমবার প্রথমবার সন্দেশখালির মাটিতে পা-দিয়ে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, যে অভিযোগগুলি উঠেছিল, সেসবই ভাওতা ছিল। তাঁর কথায়, “আমি জানি এখানে টাকার অংকে খেলা হয়েছে। পরে দেখলেন তো সবটাই ভাওতা। মিথ্যে বেশিদিন চলে না। মিথ্যে তো একদিন প্রকাশ পায়।”
এ দিন মঞ্চ থেকে মমতা সন্দেশখালির মহিলাদের উদ্দেশে বার্তায় বলেন, “কেউ ডাকলেই চলে যাবেন না। বিজেপির টাকার প্রলোভনে পা দেবেন না। দুষ্টু লোকের খপ্পড়ে পড়বেন না। প্রশাসন যা করার দুয়ারে সরকারের মাধ্যমেই করবে। প্রয়োজনে আপনার দরজায় আসবে। তারা আপনাদের ব্যাপারটা দেখবে।”
তবে, একবছর আগে নারী নির্যাতন ও জমি দখল-সহ নানা অভিযোগ উঠেছিল শেখ শাহজাহান ও তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই ইস্যুতে সরাসরি না-হলেও, মহিলাদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “মেয়েরা, কেউ ডাকল আর চলে গেলেন, এমনটা করবেন না। আপনাদের অধিকার, আপনাদের নিজস্ব।”
এর পরপরই সন্দেশখালির আন্দোলনে টাকার অংকের খেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি জানি এখানে টাকার অংকে খেলা হয়েছে। পরে দেখলেন তো সবটাই ভাওতা। মিথ্যে বেশিদিন চলে না। মিথ্যে তো একদিন প্রকাশ পায়। আমি চাই যা হয়েছে সব ভুলে যেতে। আমার মনে নেই। আমি ভুলে গিয়েছি। আমি চাই সন্দেশখালির ছেলেমেয়েরা এক নম্বর জায়গায় যাক। তাঁরা ভারতবর্ষে এক নম্বর হোক।”
সন্দেশখালির আন্দোলনের অন্যতম অভিযোগই ছিল, সেখানকার বাসিন্দাদের প্রতি বঞ্চনা ও অবহেলা। তাই এ দিন মমতার ভাষণের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল সন্দেশখালি তথা উত্তর ২৪ পরগনার উন্নয়নের প্রসঙ্গ। তিনি সন্দেশখালির ধুলিয়া-ধুপখালী সেতু-সহ প্রায় ১২৩ কোটি টাকার ৬৬টি প্রকল্পের ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে আরও ৪২টি প্রকল্পের সূচনা করেন তিনি।
বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণার সূত্রে, কাটমানি ইস্যুতে সন্দেশখালির মানুষকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য টাকা দিচ্ছে। কিন্তু, কেউ টাকা চাইলে আপনারা দেবেন না। আমরা যে টাকা দিচ্ছি, তার জন্য কোনও পয়সা কাউকে দেওয়ার দরকার নেই। কারণ টাকাটা সরকারের। আপনি পাচ্ছেন সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে। তাই কেউ চাইলেও টাকা দেবে না। এটা আপনাদের অধিকার।”
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে ফের কেন্দ্রকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি, “আজ যেটার নাম বাংলার বাড়ি, সেটাই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা। দীর্ঘদিন এই প্রকল্পের জন্য টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এখন রাজ্যের হাতে কোনও ট্যাক্স নেই। একটাই ট্যাক্স, জিএসটি। যে টাকাটা কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যায়। সেই টাকা থেকে আমরা যা পাই, তা দিয়ে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে খরচ করছি।”
Be the first to comment