৩ জামাত জঙ্গিকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, নাজিউর নামের ওই জঙ্গি বাংলাদেশের হুদী জঙ্গিদলের এক নেতাকে অস্ত্র সরবরাহ করত। ধৃতদের সেখ সাকিল নামে এক ব্যক্তি কলকাতায় সাহায্য করত বলেও জানা গিয়েছে। ধৃতরা শহরে বড় কোনও নাশকতার ছক কষছিল বলে অনুমান করছে পুলিশ। আজই ধৃত ওই ৩ জঙ্গিকে আদালতে পেশ করা হচ্ছে। সেখানে তাদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে পুলিশ।
পূলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ৩ জনের মধ্যে প্রধান মাথা হল নাজিউর রহমান। সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন জেএমবি জঙ্গি। তবে শুধুমাত্র নাজিউরই নয়, এই ৩ জনের মধ্যে আরও একজনকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর কাগজ ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রয়েছে প্রচুর বইও। সেই নথি ও বইগুলো ঘেঁটে পুলিশ দেখছে। আপাতত যে তথ্য পুলিশের কাছে উঠে আসছে, তাতে জানা যাচ্ছে যে, ধৃত এই ৩ জন বাংলাদেশের মাস্টার জিয়া গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
পুলিশ তদন্তে নেমে আরও জানতে পেরেছে যে, এই ৩ জন বিগত কয়েক মাস ধরেই কলকাতায় বিভিন্ন জায়গায় ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করছিল। শহরের বিভিন্ন জায়গা গা ঢাকা দিয়ে থাকত তারা। পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ধৃতরা তাদের গ্রুপে আরও নতুনদের নিয়োগও করত। নিজেদের গ্রুপ আরও বাড়ানোই লক্ষ্য ছিল এই ৩ জনের।
শুধু তাই নয়, এই ৩ জেএমবি জঙ্গির সঙ্গে মোট ১৫ জন বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজন জম্মু-কাশ্মীরে চলে যায়, কয়েকজন গিয়েছিল ওড়িশায় ও বাকিরা কলকাতায় ছিল। তবে তারা কী কারণে এসেছিল? কোনও জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ছিল কি না, ওই সদস্যদের সঙ্গে আল কায়দা জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, ধৃতেরা জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র বড় মাপের নেতা।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ১৫ জুন হরিদেবপুর থানার ঈশান ঘোষ রোডের একটি বাড়ির দুটো ঘর ভাড়া নিয়েছিল এই তিনজন। দীর্ঘদিন ধরে পরিচয় গোপন করে ওই এলাকায় থাকছিল ধৃত জঙ্গিরা। মিথ্যে কথা বলেই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল তারা। বাড়িওয়ালাকে জানিয়েছিল যে, তাদের মধ্যে একজনের ফলের ব্যবসা রয়েছে। আর দু’জন ছাতা সারাইয়ের কাজ করে। কিন্তু বাসিন্দারা কেউই তাদের আসল পরিচয় ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। ভাড়া ঘরের মধ্যে থেকে প্রচুর ছাতা সারাইয়ের সরঞ্জামও উদ্ধার হয়েছে। ডাইরি ছাড়া অনেকগুলো ফোন নম্বরও পেয়েছে পুলিশ। সেগুলো কাদের নম্বর তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, রবিবার কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয় ৩ জেএমবি জঙ্গিকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, দক্ষিণ শহরতলীর হরিদেবপুর থানার ঈশান ঘোষ রোডের ভাড়া বাড়ি থেকে এই তিন জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে এসটিএফ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম নাজিউর রহমান, সাব্বির ও রবিউল। ধৃতদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও জেএমবি সম্পর্কিত প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ নথিও উদ্ধার করেছে এসটিএফ।
Be the first to comment