রাজ্য পুলিশ ও কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে ক্যানিং থেকে ধৃত এক জঙ্গি

Spread the love

রোজদিন ডেক্স: আত্মীয়ের বাড়িতে গা-ঢাকা দিয়েও শেষরক্ষা হল না। ক্যানিং থেকে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ল কাশ্মীরের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-উল-মুজাহিদিনের এক সদস্য। ধৃত জঙ্গির নাম জাভেদ মুন্সি।
পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রীনগরের তানপুরা এলাকায় বাড়ি ধৃতের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের হাসপাতাল মোড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিল সে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, রবিবার সকালে রাজ্য পুলিশের সহায়তায় কাশ্মীর পুলিশের যৌথ অভিযানে জাভেদ মুন্সি নামে তেহরিক-উল-মুজাহিদিনের ওই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হচ্ছে এবং ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এরপর জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ তাকে কাশ্মীরে নিয়ে যাবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ে নিজের আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন জাভেদ। তাঁর ওই আত্মীয় পেশায় শাল ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী বলেন, ‘‘জাভেদ আমার ননদের স্বামী হন। যে দিন তিনি এসেছিলেন আমাদের বাড়িতে, সে দিনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ ধৃতের জঙ্গিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমার ননদের সঙ্গে ২৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছে জাভেদের। ও কী করে, কিছুই জানি না। পুলিশও জিজ্ঞেস করেছে একই প্রশ্ন। আমরা জানিয়েছি যে জাভেদ আমাদের আত্মীয়। এখানে আসতে চেয়েছিলেন। আমরা বলেছি, এসো। এর থেকে বেশি কিছু জানি না।’’
তেহরিক-উল-মুজাহিদিন সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরে অশান্তি ও সন্ত্রাস ছড়ানোর কাজে লিপ্ত। সংগঠনের বিভিন্ন কার্যকলাপের সঙ্গে জাভেদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, জাভেদ কাশ্মীরে সংগঠনের হয়ে বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল। কী কারণে সে ক্যানিংয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল এবং এখানে তার কী পরিকল্পনা ছিল, তা জানতে পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “জাভেদের গতিবিধি দীর্ঘদিন নজরে রাখা হচ্ছিল। তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর, যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই গ্রেফতার বড় সাফল্য। আমরা জাভেদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার আশা করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ঘটনাটি জানতে পেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনেকেই পুলিশ এবং এসটিএফ-এর তৎপরতার প্রশংসা করেছেন।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যৌথ অভিযান এই ধরনের আন্তঃরাজ্য অপরাধ মোকাবিলার ক্ষেত্রে একটি বড় উদাহরণ। এধরনের যৌথ কার্যক্রম দুই রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই গ্রেফতারের ফলে শুধুমাত্র ক্যানিং নয়, পুরো রাজ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অসম পুলিশ অভিযান চালিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে। যারা ইসলামিক স্টেট জেহাদি গোষ্ঠীর মতাদর্শে বিশ্বাসী আনসারুল্লা বাংলা টিমের সদস্য। বাংলায় বসেই বাংলায় জেহাদের ছক কষছিল তারা। বারবার ভিনরাজ্যের পুলিশ যেভাবে বাংলায় অভিযান চালিয়ে একের পর এক জেহাদিকে গ্রেপ্তার করছে, তাতে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*