সারদায় গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম মামলায় অভিযোগমুক্ত কুণাল ঘোষ

Spread the love

সারদা কাণ্ডে যে মামলাটিতে প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ, বৃহস্পতিবার সেই মামলায় তাঁকে অভিযোগমুক্ত ঘোষণা করল এমপি-এমএলএ বিশেষ আদালত। বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগই তথ্যপ্রমাণে প্রতিফলিত হচ্ছে না। ফলে তিনি কুণালকে ‘ডিসচার্জড’ ঘোষণা করেন।

এগারো দফা তলব এবং জেরার পর ২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর কুণাল ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছিল আইপিএস রাজীব কুমারের নেতৃত্বাধীন সিট। সারদার টাকা মিডিয়ায় ব্যবহার এবং শেষদিকে কর্মীদের বেতন না দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল পুলিশ। তাতে কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, তিনি সম্পাদকীয় বিভাগের কর্মী ছিলেন। কোনওভাবেই আর্থিক বিষয়ে জড়িত নন। ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানার মামলাটিতে পুলিশ তবুও চার্জশিট দেয়।

এরপর কুণাল জামিন পেলেও ‘শোন অ্যারেস্ট’ দেখিয়ে তাঁকে অন্যান্য বহু মামলায় যুক্ত করা হয়। এখন প্রায় ন’বছর পর কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী আদালতে ডিসচার্জ পিটিশন ফাইল করে বলেন, ”বিনা দোষে আমার মক্কেল এই মামলায় যুক্ত থাকবেন কেন?”

বৃহস্পতিবার শুনানির সময় বিচারক মনোজ্যোতি ভট্টাচার্য সব নথি দেখে সরকারপক্ষকে জানতে চান, কুণালের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ কই? আইনজীবী সন্দীপ ভট্টাচার্য বলেন, “কুণালের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ বা প্রমাণ নেই। সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে ষড়যন্ত্রী অনুমান করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” বিচারকের বক্তব্য, “মুখের কথা আর অনুমানে কাউকে দোষী বলা যায় না।” এরপর তিনি সুদীপ্ত সেন প্রসঙ্গে ঢুকে বলেন, “কর্মীদের বেতন সংক্রান্ত প্রতারণার কোনও প্রমাণ চার্জশিটে নেই। বেতন দিতে না পারা আর প্রতারণার মধ্যে তফাত আছে।”

এরপর বিচারক বলেন এই মামলাটির যা ধরণ, তাতে সারদার টাকার সঙ্গে এই অভিযোগকে মিলিয়ে দেখানোটাও ভুল। শেষ পর্যন্ত তিনি বলেন, শুধু কুণাল ঘোষই নন, এই মামলাতে জড়িত সকলকেই ডিসচার্জ করা হল। উল্লেখ্য, এর ফলে অব্যাহতি পেলেন সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ দত্তও। অয়ন চক্রবর্তী এজলাসে মন্তব্য করেন, “আমার মক্কেলের বদনাম, হয়রানি, জীবনের সময় নষ্ট করা হল, এগুলো কে ফিরিয়ে দেবে?”

পরে কুণাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “জ্ঞানত কোনও দোষ করিনি। কয়েকজন চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছিলেন। আমি প্রতিটি মামলাই আইনি পথে লড়ে যাব।” তিনি এও বলেন, “বন্দিদশাতেও তৃণমূলকেই চাঁদা দিয়েছি। রাজনীতি আর আইনি লড়াই আলাদা। আমি তৃণমূল পরিবারের সদস্য ছিলাম, আছি, থাকব।” প্রশ্নের উত্তরে কুণাল রসিকতা করে বলেন, “দু’জনকে ধন্যবাদ দেব। আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী আর হরি। রাখে হরি মারে কে!”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*