নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। অন্যতম অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তী ও দিলীপ ঘোষের নাম। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। আজ, বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালত চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে পার্থ শুভেন্দু-সুজন-দিলীপের নামে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “যে সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁরা নিজের দিকে দেখুন, উত্তরবঙ্গে তাঁরা কী করেছেন ! তাঁরা সমস্ত জায়গায় চাকরির জন্য তদ্বির করেছেন। আমি বলেছিলাম করতে পারব না। কোনও সাহায্য করিনি আমি। বেআইনি কাজ করব না বলেছিলাম। শুভেন্দুকে জিজ্ঞাসা করুন ও কী কী করেছে। শুভেন্দু অধিকারীর ‘১১-‘১২ সালটা দেখুন না। ডিপিএসসি-তে কী করেছে সকলে খোঁজ নিয়ে দেখুন না।”
পার্থর মুখে ওই তিন নেতার নাম শোনার পরই মাঠে নামে শাসক দল। সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু-সুজন-দিলীপকে গ্রেফতারের দাবি করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এই তিন নেতা প্রভাবশালী, এঁদের বাইরে রেখে তদন্ত সম্ভব নয়। প্রভাবশালীদের হেফাজতে নিয়ে পার্থর সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরায় দাবি তোলেন কুণাল। একই সঙ্গে বাম জমানায় নিয়োগ দুর্নীতির কথাও তুলে ধরেন তিনি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী বেনিয়মক করে বছরের পর বছর মোটা বেতনের চাকরি করেছেন বলে অভিযোগ করেন কুণাল।
কুণাল ঘোষ বলেন, “শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত যে বিতর্ক, তাতে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার করে দিয়েছেন কোনও অন্যায়কে তৃণমূল সমর্থন করবে না। ভুল বা অন্যায় হয়ে থাকলে তার শাস্তি হবে। কিন্তু তৃণমূলকে কুৎসা কালিমালিপ্ত করার খেলা চলছিল এক তরফাভাবে। আদালতও একটা সময় বলছিল রাজ্য কিছু করছে না সিবিআইকে দিচ্ছি। আবার এখন সিবিআই-এর ভুল ধরা শুরু। আমরা দেখলাম এজেন্সি নির্দিষ্ট অভিমুখে যাচ্ছে। শুধু তৃণমূল তৃণমূল করা হয় আর দিলীপ ঘোষের ফাইল উদ্ধার হচ্ছে প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে। সেক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।”
কুণালের সংযোজন, “বাম আমলে চিরকুটে চাকরির অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলেছেন। আমাদের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক কিছু তথ্য সামনে এনেছেন। আপনারা বলুন, সিপিএম আমলে হোলটাইমারদের কার বাড়িতে সরকারি চাকরি ছিল না। তখন এত ডিজিটালাইজ ছিল না বলে ঢাকা পরে গেছিল। মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারি, ত্রিপুরায় শিক্ষকদের চাকরি গেছে। সিপিএম জমানায় তাদের বাড়ির লোক সরকারি চাকরি করেছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে আমরা নথি পাঠিয়েছি। উনি খতিয়ে দেখছেন। সুজনবাবুর স্ত্রী মিলিদেবী চাকরির জন্য কোন পরীক্ষা দিয়েছিলেন? আমরা প্রশ্ন করছি কোন পদ্ধতিতে তাঁর চাকরি হয়েছিল? ৫৫ হাজার টাকা বেতন নিয়ে অবসর পেয়েছিলেন। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তদন্তের দাবি করছি। শিক্ষামন্ত্রী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এগুলো তদন্ত করে সকলের সামনে আনুন। আর সিবিআই-ইডি সেগুলিকে তদন্তের আওতায় আনুক।”
এরপর সিপিএম নেতাদের পরিবারের আর কারা কারা কোথায় কীভাবে চাকরি পেয়েছেন, তার একটি তালিকা তুলে ধরেন কুণাল ঘোষ।যেখানে সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে ঘুরপথে চাকরি করেছেন বলে দাবি করেন তৃণমূল নেতা।
Be the first to comment