এবারও মিলল না লোকাল ট্রেন চালানোর অনুমতি। বুধবার নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত রাজ্য লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলবে।
ঊর্ধ্বমুখী করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে গত ১৬ মে থেকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ আছে। শুধুমাত্র স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলছে। পরবর্তীতে একাধিক ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও লোকাল ট্রেন চালানোর অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। ট্রেন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলে যেতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়ছেন আমজনতা। রীতিমতো ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তার জেরে মাঝেমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।
মঙ্গলবারই রেলের তরফে জানানো হয়েছিল, শুক্রবার থেকে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখা হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানান, যেভাবে মানুষ স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে ওঠার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন, তাতে রেল কর্তৃপক্ষ চিন্তিত। রাজ্য সরকারকে রেলের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। একই সুরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক গীতা সরকার বলেন, ‘ট্রেন চালাতে আমরা তৈরি। অপেক্ষা শুধু রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেতের।’
কিন্তু তারপরও লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর অনুমতি দেয়নি নবান্ন। বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। সেই পরিস্থিতিতে ট্রেন চালানোর অনুমতি না দিয়ে ঠিক পথেই হেঁটেছে নবান্ন। কারণ লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া, সেখান থেকে আসা-যাওয়া করেন প্রচুর মানুষ। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বাড়বে।
যদিও নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, করোনার সংক্রমণের আশঙ্কায় লোকাল ট্রেন চালানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বটে। কিন্তু বাসে যা ভিড়, তাতে আদৌও কোনও লাভ হচ্ছে? উলটে বাড়তি টাকা খরচ করে অফিসে যেতে হচ্ছে।
একনজরে জেনে নিন কী কী নির্দেশিকা বহাল থাকছে…
বাজার-দোকান খোলার সময়ের নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলবে বাস, ট্রাম, ট্যাক্সি, অটো।
চালু হচ্ছে না লোকাল ট্রেন। স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চলবে।
সিনেমা হল, স্পা, সুইমিং পুল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরের সাঁতারুরা সকাল ৬ টা থেকে ১০ টার মধ্যে সুইমিং পুল ব্যবহার করতে পারবে প্র্যাকটিসের জন্য।
জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, নিকাশির মতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে সরকারি অফিস স্বাভাবিক নিয়মে খুলবে। অন্যান্য বিভাগে ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস খোলা হবে। সে ক্ষেত্রে অফিসের বিভাগীয় প্রধানকে রোস্টার তৈরি করতে হবে।
বেসরকারি আর কর্পোরেট সেক্টরের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে অফিস খোলা যাবে। কর্মীদের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। অফিসের মধ্যে পরতে হবে মাস্ক, মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব।
সমস্ত ধরনের রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকছে। কোনওরকম জমায়েত করা যাবে না।
৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান।
শেষকৃত্যে ২০ জন যোগ দিতে পারবেন।
সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকবে। টিকা যাঁরা নিয়েছেন, তাঁরাই পার্কে যেতে পারবেন।
সকাল ৬ টা থেকে সকাল ১০ টা ও বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত জিম খোলা যাবে।
সেলুন বা পার্লার খোলার ক্ষেত্রেও গ্রাহক সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি রাখা যাবে না, সব কর্মীর টিকাপ্রাপ্ত হওয়া জরুরি।
শপিং মলে ৫০ শতাংশ মানুষের প্রবেশের অনুমতি।
৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে রেস্তোরাঁ, বার।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে।
৫০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে শুটিং চলবে।
Be the first to comment