রোজদিন ডেস্ক :- বিহার বিধানসভার চারটি আসনের উপনির্বাচনে এনডিএ জোট সমস্ত আসন দখল করেছে। আর ভোটে হেরেও চমকে দিলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তার কুশলে জয় পরাজয় নির্ধারিত হল।
বিহারের চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তারারি ও রামগড় আসন গিয়েছে বিজেপির দখলে। ইমামগঞ্জ আসনটি দখল করেছে জিতন রাম মাঞ্জির দল হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা। বেলাগঞ্জ আসনে জয়ী জেডিইউ। চারটি দলই এনডিএ শরিক। এই উপনির্বাচনের ফলাফল বিহার বিধানসভার সমীকরণে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারছে না, তবে অনেকেই প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টির (জেএসপি) দিকে নজর রাখছিলেন যারা প্রথমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
ফলাফল দেখিয়ে দিয়েছে পরের বছর বিহারে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, তাই, প্রশান্ত কিশোরের দলের প্রথম নির্বাচনী পারফরম্যান্স পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে কী প্রভাব ফেলতে পারে তার আভাস এসেছে।
প্রথমত, বিহার বিধানসভা উপনির্বাচনে ইমামগঞ্জ থেকে প্রথম জয় পেয়েছে এনডিএ। এই আসনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঞ্জির দল হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা দলের দীপা কুমারী প্রায় ছয় হাজার ভোটের ব্যবধানে আরজেডি-র রোশন কুমারকে পরাজিত করেছেন। এখানেই জন সুরাজ পার্টির জিতেন্দ্র পাসওয়ান তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। এই আসনে তিনি পেয়েছেন ৩৭ হাজারের বেশি ভোট। তার মানে এই আসনের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখেছে পিকে-র দল।
দ্বিতীয়ত, বেলাগঞ্জ আসনেরও একই অবস্থা। এখানে জেডিইউ-র মনোরমা দেবী প্রায় ২১ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন। এখানে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আরজেডির বিশ্বনাথ কুমার সিং। উল্লেখযোগ্য হল বেলগঞ্জ আসনটি বেশ কিছু বছর ধরে আরজেডির দখলে ছিল। বেলাগঞ্জ আসনে জন সুরাজ পার্টি ১৭ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছে, অন্যদিকে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল এআইএমআইএমও এখান থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভোট পেয়েছে। তার মানে এই দুই দল মিলে এখানে আরজেডির পথ কেটেছে।
তৃতীয়ত, রামগড় বিধানসভা আসনে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন জন সুরাজ দলের সুশীল কুমার সিং। তিনি এখানে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ভোট পেয়েছেন। যেখানে বিজেপির অশোক কুমার সিং মাত্র ১৩৬২ ভোটে জিতেছেন। তার মানে এখানেও পিকে-র দল জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে।
অন্যদিকে, তারারি বিধানসভা আসনের বিজেপির বিশাল প্রশান্ত সিপিআই (এমএল) দলের রাজু যাদবকে দশ হাজারেরও বেশি ভোটে হারিয়েছেন। এখান থেকে পিকে দলের প্রার্থী কিরণ সিং পেয়েছেন ৫৬২২ ভোট।
বিহারের এই উপনির্বাচন এক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টি প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল। তবে পিকে-র দল কোনো আসনে জয়ী হয়নি বা মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোথাও দেখা যায়নি। কিন্তু তারাই জয় পরাজয় নির্ধারিত করেছে।
প্রসঙ্গত, বিহারের বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফলের পরে, প্রশান্ত কিশোর সাংবাদিকদের বলেন যে একটি জায়গায় যেখানে গত ৫০ বছর ধরে জাতপাতের রাজনীতির প্রাধান্য রয়েছে, সেখানে প্রথম প্রচেষ্টায় ১০ শতাংশ ভোট পাওয়া আমাদের জাদু। আমাদের দলের বয়স এক মাস। যদিও জন সুরাজ প্রচার দুই বছরের পুরনো এবং ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ সমর্থন করেছে, সমর্থন করা এবং ভোট পাওয়া দুটো আলাদা জিনিস। আমাদের দল যদি দশ শতাংশ ভোট পায় তার দায় আমার। যদিও এটা আমার একক দায়িত্ব নয়। কিন্তু আমি পিছিয়ে যাচ্ছি না। এই দশ শতাংশ বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করতে হবে। তা এক বছরেই হোক বা পাঁচ বছরে।
উল্লেখ্য, জান সুরাজের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এক কোটিরও বেশি সদস্য। গত মাসে ২ অক্টোবর প্রশান্ত কিশোর তার দল চালু করেন। পার্টির জন্য তিনি বিহারে একটি পদযাত্রা করেছিলেন। জন সুরাজ দলের মতে, এই পদযাত্রার এখন পর্যন্ত ৬৬৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে এবং এই সময়ের মধ্যে এই পদযাত্রা পৌঁছেছে প্রায় ৩ হাজার গ্রামে।
Be the first to comment