তাঁর সঙ্গে থাকা ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কের সংখ্যা ৫০ পূর্ণ হওয়ার পথে ৷ তাঁদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে ‘একটি বড় জাতীয়’ দল, এমনটাই দাবি করেছেন শিবসেনার বিদ্রোহী নেতা-বিধায়ক একনাথ শিন্ডে ৷ আর এই বড় জাতীয় দল তাঁদের পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে উল্লেখও করেছে মহারাষ্ট্রের নগরোন্নয়ণ ৷ নামোল্লেখ না করলেও সেই দলটি যে বিজেপি, তা বুঝতে মুহূর্তও লাগে না ৷
গেরুয়া শিবির অবশ্য এমন দাবি অস্বীকার করেছে ৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাওসাহেব পাটিল দানবে বলেন, আমরা একনাথ শিন্ডের সঙ্গে কথা বলিনি ৷ এটা শিব সেনার অভ্যন্তরীণ বিষয় ৷ এতে বিজেপির কিছু করার নেই ৷ আমরা সরকার গড়ার দাবি জানাচ্ছি না ৷ মহারাষ্ট্রের বিজেপি প্রধান চন্দ্রকান্ত পাটিলও একই দাবি জানিয়েছেন, রাজ্যে রাজনৈতিক সংকটে তাদের কোনও হাত নেই ৷ তবে বিরোধী দলনেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ‘কিছু কাজে’ বৃহস্পতিবার দিল্লি গিয়েছিলেন, জানান রাজ্য বিজেপি প্রধান ৷
এদিকে মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার গড়ার ইঙ্গিত দিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ রামদাস আঠওয়ালে ৷ দিল্লিতে শুক্রবার তিনি বলেন, উদ্ধব ঠাকরের সময় শেষ ৷ বেশির ভাগ বিধায়ক একনাথ শিন্ডের সঙ্গেই থাকবে ৷ তিনি বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়বেন ৷
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শরদ পাওয়ারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত ৷ তিনি টুইট করে লেখেন, বিজেপি সরকারের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বর্ষীয়ান নেতা শরদ পাওয়ারকে ভয় দেখিয়েছেন, তিনি যদি এমভিএ সরকারকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁকে আর বাড়ি ফিরতে হবে না ৷ এমভিএ বাঁচুক অথবা না বাঁচুক, শরদ পাওয়ারের বিরুদ্ধে এ ধরনের ভাষা মেনে নেওয়া যায় না ৷
সাংবাদিকদের রাওয়াতের প্রশ্ন, এই ধরনের হুমকির পিছনে কি নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ রয়েছেন? তিনি বলেন, আমরা বিদ্রোহী বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি ৷ ডেপুটি স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে ৷ আজ সকালে গুয়াহাটিতে বিদ্রোহী একনাথ শিন্ডে বাহিনীর সঙ্গে দেখা করতে যান শিবসেনা নেতা সঞ্জয় ভোঁসলে ৷ তিনি শিন্ডেকে ‘মাতোশ্রী’তে ফিরে যাওয়ার আর্জি জানান ৷ তিনি বলেন, বিধায়কদের ‘মাতোশ্রী’তে ফিরে যাওয়া উচিত ৷ শিবসেনা তাঁদের বিধায়কদের অনেক কিছু দিয়েছে ৷ তবে এতেই বিপত্তি বেধেছে ৷ গুয়াহাটিতে পুলিশ তাঁক আটক করে বিমানবন্দরে নিয়ে যায় এবং মুম্বইগামী বিমানে তুলে পাঠিয়ে দেয় ৷ অসম কংগ্রেস প্রধান ভূপেন কুমার বোরাহ শিবসেনা বিধায়ক শিন্ডেকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, রাজ্যের স্বার্থে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তিনি যেন অসম ছেড়ে চলে যান ৷
তবে সঞ্জয় রাউত আত্মবিশ্বাসী যে শিবসেনা মহারাষ্ট্র সরকারে থাকবে ৷ তিনি বিদ্রোহী নেতাদের বিধানসভায় এসে লড়ার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, এমভিএ বাকি আড়াই বছরও সম্পূর্ণ করবে ৷ কংগ্রেস, শিবসেনা এবং এনসিপি একে অপরের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখছে, জানান রাজ্যসভার শিবসেনা সাংসদ ৷
মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংকটের আঁচ গুয়াহাটিতেও পৌঁছেছে ৷ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে শিন্ডের হোটেলের সামনে অসম কংগ্রেস এবং শিব সেনার বেশ কিছু নেতা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল ৷ পুলিশ তাদের বাসে তুলে নিয়ে যায় ৷ এমন সময় মিডিয়ার চোখ এড়িয়ে শিন্ডে হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন ৷ তিনি ঠিক কোথায় গিয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয় ৷ তবে তাঁর বাহিনী এখনও হোটেলই রয়েছে ৷ তবে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে শিন্ডে নাকি কামাক্ষ্যার দিকে গিয়েছেন ৷ কেউ বলছে মুম্বই ৷ আর কতক্ষণ?
Be the first to comment