সোমবার কালিঘাটে তৃণমূলের কর্মসমিতির বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মমতা – অভিষেক

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :-  বাংলায় উপনির্বাচন শেষ হতেই আগামী সোমবার কালিঘাটে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি সহ অন্যান্য নেতারা। আর মাত্র দেড় বছর পরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনে ভালো ফলের লক্ষ্যে সময় থাকতেই কোমর বেঁধে মাঠে নামতে চায় জোড়াফুল শিবির। বৈঠকে ভোটের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দলের সংগঠন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে আলোচনা চলছিল, সেই রদবদল কি এবার সত্যিই বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সংশয় কাটতে পারে এই বৈঠকের মাধ্যমে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই বৈঠকে তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সোমবার থেকেই রাজ্য বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে, তেমনই লোকসভাতেও অধিবেশন শুরু হবে। সুতরাং, এই দিনটি রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, বিধানসভার প্রথম দিনটি সাধারণত শোকপ্রস্তাব পাঠ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, তাই অধিবেশন শুরুর দিন পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে সাংসদ ও বিধায়কদের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিতে পারেন।
তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমসহ শীর্ষ নেতারা কালীঘাটে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। দলীয় সূত্রে খবর, অনেকদিন ধরেই সাংগঠনিক রদবদলের প্রস্তুতি চলছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি সাংগঠনিক রদবদলের প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। এই বৈঠকের পরেই দলীয় সংগঠন এবং নেতৃত্বে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে এই বৈঠকের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ পথচলা সম্পর্কে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, দলের সংগঠন সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, বিশেষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবিত রদবদল এবং নেতৃত্বের দায়িত্বে পরিবর্তন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।
অন্যদিকে, শীতকালীন অধিবেশনকে কেন্দ্র করে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংসদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল এবং বিষয় আলোচনার জন্য উত্থাপন হতে পারে। সেগুলোর মধ্যে একটি হলো ওয়াকফ বিল। এর প্রভাব নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংসদে আলোচনা তীব্র হতে পারে। গতবার তৃতীয় মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদে আনা হয়েছিল। ওই বিলটি পরবর্তীতে লোকসভায় পেশ করা হয় এবং এর পরবর্তী প্রক্রিয়া হিসেবে সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল।
তবে, বিরোধী দলের সদস্যরা দাবি করেছেন, এই বিলের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আরও গভীর আলোচনা প্রয়োজন। তারা মনে করেন, বিলটি সম্পূর্ণভাবে খতিয়ে দেখা না হলে, এর মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্পত্তি এবং তাদের অধিকার নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে, শীতকালীন অধিবেশন শুরুর প্রথম সপ্তাহেই সংসদীয় কমিটি এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। তবে এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে, আর এর প্রভাব যে তৃণমূলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, তা বোঝা যাচ্ছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের বৈঠক এবং শীতকালীন অধিবেশন একসঙ্গে হওয়ায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। বিশেষ করে, সাংগঠনিক রদবদল এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নতুন সিদ্ধান্তগুলি তৃণমূলের ভবিষ্যৎ রাজনীতি এবং কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
উল্লেখ, রাজ্যের ৬ কেন্দ্র সম্প্রতি উপনির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এই সবকটি আসনেই তৃণমূলের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি। ফলে বৈঠকে তৃণমূলের এই উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়েও আলোচনা হতে পারে। আরজি কর কাণ্ডের পর এই প্রথম সাংগঠনিক বৈঠক ডেকেছেন তৃণমূল সুপ্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে দলের নেতাদের তিনি বিশেষ কোনও বার্তা দেন কি না, সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকেই তৃণমূলের নেতাদের হাতে বৈঠকের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে যাব।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*