একজন দিদি, অপরজন বোন। দু’জনেই প্রশাসনিক প্রধান – দুই বাংলার। সীমান্তের এপার-ওপারের চিরকালীন সুসম্পর্কের মতো তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কও দীর্ঘদিনের। বিশেষ উপলক্ষে দেখা হলে তাঁরা পরস্পরকে ‘দিদি-বোন’ বলেই সম্বোধন করেন। দেখা-অদেখায় উপহার বিনিময়ও চলতে থাকে। দিদি হলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আর বোন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি বছরের মতো আমের মরশুমে এবারও বোন মমতার জন্য হাঁড়িভাঙা আম পাঠালেন দিদি হাসিনা। সোমবার হাজার কেটি হাড়িভাঙা আম বেনাপোল-পেট্রাপোল- সীমান্ত দিয়ে এসে পৌঁছল বাংলায়।
সোমবার আম আসার সময়ে সীমান্তে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ণচন্দ্র পাল, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ, নাভারন পুলিশের সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলাম, বেনাপোল স্থলবন্দরের ডিডি মামুন কবির তরফদার। ভারতের পক্ষে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের ডিআইজি সুকেশ জেল, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারি শেখ মারেফাত তরিকুল ইসলাম, প্রটোকল অ্যাসিস্ট্যান্ট আজিজুল আলম ও এসকে ইমাদ। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, কাস্টমস ও বন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাংলাদেশের দেওয়া আম বেনাপোল স্থলবন্দরের জিরো লাইনে ভারতের প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।এদিনই সীমান্তের আরেকদিকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার জন্য আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৮০০ কেজি আম্রপালি আম পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ভারতের। সেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট রেখে দু’দিন আগে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য আম পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার দুপুরে উপহার হিসেবে ১ হাজার ২০০ কেজি ‘আম্রপালি’ আম পৌঁছে দেওয়া হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আম ও ইলিশ উপহার দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং মানুষের বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করছে।
গত বছর থেকে শেখ হাসিনা ‘ম্যাঙ্গো ডিপ্লোম্যাসি’ শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত বছর বাংলাদেশ সফরে করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার জন্য সীমান্তে আম গ্রহণ করেন ত্রিপুরার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ।
Be the first to comment