নন্দীগ্রামে আমাকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল, ফের অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

Spread the love

একুশের বিধানসভা ভোটে এরাজ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল। এবার এ রাজ্যের শাসকদলের লক্ষ্য ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। সেই টার্গেটকে সামনে রেখেই এবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে চলেছে ঘাসফুল শিবির। প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে যে গান তৈরি হয়েছে সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে দেশের নেত্রী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

বরাবারই ছাত্র ও যুব সমাজকে গুরুত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেও কংগ্রেসের ছাত্র ও যুব শাখা করে রাজনীতিতে উঠে এসেছিলেন তিনি। তাই সর্বদা এই দুই সংগঠনকে উদ্বুদ্ধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৯-এর লোকসভা ভোট হোক বা ২০২১-এর বিধানসভা ভোট, ছাত্র এবং যুবরা তাঁর প্রতিটি বক্তৃতায় আলাদা গুরুত্ব পেয়েছেন। এবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিসবে তাই সরাসরি ছাত্রদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে চান তৃণমূল সুপ্রিমো। শনিবার সকালেই টুইট করে দলের ছাত্র সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি লেখেন, “আজকের দিনে ছাত্র পরিষদের সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা। দলের প্রতি প্রত্যেকের নিষ্ঠা এবং আমাদের প্রাপ্তিতে, আমরা গর্বিত। আজ সমস্ত ছাত্রদের কাছে আমার আর্জি, যাঁরা গণতন্ত্রকে নষ্ট করতে চায়, তাঁদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।”

সূত্রের খবর, আজ ভার্চুয়াল ভাষণে ২০২৪-এর টার্গেট বেধে দেওয়ার পাশাপাশি, সরাসরি ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন তিনি। যেহেতু ২০২৩-এ ত্রিপুরা জয় তৃণমূলের লক্ষ্য, তাই এবার ত্রিপুরার ছাত্রদের উদ্দেশ্যেও বিশেষ বার্তা দিতে পারেন তিনি।

নন্দীগ্রামে তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের ভার্চুয়াল সভায় ফের বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছিল। নন্দীগ্রামে আমাকে তো খুন করার চেষ্টা করেছিল। পারেনি।’’ নন্দীগ্রামে ভোটের প্রচারে গিয়ে পায়ে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতা আরও বলেন, ‘‘আমার পা নিয়ে এখনও ভুগছি আমি। যত দিন বাঁচব মানুষের মতো বাঁচব, যে দিন যাব, সে দিন সিংহশাবকের মতো যাব।’’

প্রসঙ্গত, এ বার বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের আসন ছেড়ে নন্দীগ্রামে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। ১০ মার্চ সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া মন্দিরের কাছে প্রচারে গিয়ে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে আনা হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর পায়ে প্লাস্টার করা হয়। পায়ে প্লাস্টার নিয়ে হুইল চেয়ারে বসেই ভোটে প্রচার করেন তিনি। ভোটের প্রচারে বেরিয়েও তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছে বিজেপি। আর দলের ছাত্র সংগঠনের সভায় আবারও সেই বিতর্ক উস্কে দিয়ে ফের এক বার বিজেপি-কে অভিযুক্ত করলেন মমতা।

প্রসঙ্গত, মমতা অভিযোগ তোলার পরেই সেই ঘটনার সত্যতা জানতে মুখ্যমন্ত্রী পায়ের আঘাট নিয়ে মুখ্যসচিবকে রিপোর্ট দিতে বলেছিল নির্বাচন কমিশন। প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়ে সন্তুষ্ট হননি কমিশনের কর্তারা। পরে মুখ্যসচিবকে ফের রিপোর্ট দিতে ববলা হয়।এর পর দ্বিতীয় রিপোর্টে বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছিল কমিশনকে। ঘটনার জেরে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর সেই বিষয়ে আর সে ভাবে কিছুই জানা যায়নি। তাই মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রসঙ্গ ফিরিয়ে আনায় তা আপাতত আবার আলোচনায়।

মুখ্যমন্ত্রীর এমন আক্রমণের জবাবে বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘মানুষকে সবসময় বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই। নন্দীগ্রামের মানুষ সত্যি বুঝেছিলেন বলেই ইভিএমেই তাঁরা সব অভিযোগের জবাব দিয়ে দিয়েছেন।’’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*