মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা করেন, বাকিরা তাঁকে অনুসরণ করেন। এমনটাই মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। মহিলা প্রার্থীদের অগ্রাধিকার প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করল জাগো বাংলা। তৃণমূলের মুখপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগে থেকেই নারীদের অগ্রাধিকার ও তাঁদের ক্ষমতায়নের ওপর জোর দিয়ে তাঁদের সামনের সারিতে এনেছেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তা জানতেন না।
যোগী রাজ্যে ২০২২-এর ভোটে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে মহিলাদের জন্য ৪০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে। অর্থাৎ মহিলাদের হাতেই হাত শিবিরের ভাগ্য নির্ধারণের সিংহভাগ দায়িত্ব ছাড়তে চাইছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘পরিবর্তন আনতে পারে মহিলারা। তাঁদের সামনে এগিয়ে আসা উচিত।’ যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বেই ভোটে লড়বে কংগ্রেস। হাথরাস সহ একাধিক ঘটনায় উত্তরপ্রদেশে নারী সুরক্ষার বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই দিক থেকে মহিলাদের হাতে ভোটের ব্যটন তুলে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রমিলা বাহিনী ইস্যুতেই কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আজ যা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগেই তা করে দেখিয়েছেন। প্রমান হিসেবে তৃণমূলের তরফে বেশ কিছু উদাহরণও রাখা হয়েছে। জাগো বাংলার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সাংসদদের সরব উপস্থিতির কথা। লেখা হয়েছে, শুধু কথায় নয় কাজেও করে দেখান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আসলে কংগ্রেসও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হেঁটে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে ৪০ শতাংশ মহিলা প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছে। তাদের আরও দাবি, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব দেশের আরও অনেক কিছুর মতো এই খবর টুকুও রাখেননি। তৃণমুল কংগ্রেস সুপ্রিমো অনেক আগেই মহিলাদের সামনের সারিতে এনে তাঁদের গুরুত্ব বাড়িয়েছেন।
জাগো বাংলার পাশাপাশি বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে টুইট করে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি। লেখা হয়েছে, ভারতবর্ষে রাজনৈতিক দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসেই প্রথম ৪০ শতাংশ মহিলা প্রার্থী দিয়েছে। লোকসভার দিকে তাকালেই সেটা পরিষ্কার বোঝা যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আরও বলা হয়েছে, কংগ্রেস যদি মহিলাদের নিয়ে সত্যিই আন্তরিক ও মনোযোগী হয় তাহলে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশেই সীমাবদ্ধ না থেকে অনান্য রাজ্যেও যেন একই পদক্ষেপ করে। তাহলে বোঝা যাবে তারা রাজনীতিতে মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কতটা আন্তরিক।
কেবলমাত্র লোকসভাতেই থেমে থাকা নয়, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মহিলা বিধায়কদের সংখ্যা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির থেকে অনেক বেশি বলেও উল্লেখ করা হয়েছে জাগো বাংলার প্রতিবেদনে। এ প্রসঙ্গেই টানা হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রসঙ্গ।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের তরফেও টুইটে এই বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে। তিনি লেখেন, ‘সব থেকে বেশি মহিলা প্রার্থী রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। ২০১৯ লোকসভায় ৫১ শতাংশ। ২০২১ বিধানসভায় ২৯১ প্রার্থীর মধ্যে ৫০। পুরসভা, পঞ্চায়েতেও তাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক আগেই নারীশক্তিকে এগিয়ে দিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী জানতেন না। ফলে দিদি যা যা পারেন সেগুলিতে তাঁকেই সামনে রাখলে ভালো হবে।’ অর্থাৎ পরোক্ষে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের প্রধান মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এগিয়ে রাখার বিষয় সওয়াল করলেন কুণাল।
Be the first to comment