নদী ভাঙন রুখতে তৎপর রাজ্য প্রশাসন কিন্তু সরকারের যতটা সামর্থ্য সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। বলেন, টাকা হাতে থাকলে তবেই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এটাই তাঁর কাজের পদ্ধতি।
সেচমন্ত্রীর কথার প্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পার্থ ভৌমিকের একটা স্টেটমেন্ট দেখলাম- গঙ্গা ভাঙন আমরা নিজেরাই হাতে নিয়ে করব। এ ব্যাপারে তো ক্লিয়ারেন্স আসেনি! বললে লোকের আশা জাগে। তোমরা তো একটা বিবৃতি দিয়ে খালাস। আমি এটা করি না। আমার সিস্টেম হচ্ছে যেটার টাকা Available সেটাই বলি। খবরের কাগজের নিউজের জন্য বাড়তি কথা বলা উচিত না।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেলেঘাই-কপালেশ্বরীর টাকা রাজ্য দিয়েছে। তিরিশ বছর পড়ে আছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যাঁরা একশো দিনের টাকা দেয় না, তাঁরা মালদহ-মুর্শিদাবাদে গঙ্গা ভাঙনের টাকা দেবে ভাবলে কী করে!” বারবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী, দিল্লিতে বাংলা থেকে সাংসদ-বিধায়কদের প্রতিনিধি দলও পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্র টাকা দেয়নি। ফারাক্কা ইন্দো-বাংলা জল চুক্তির ৭০০ কোটি টাকা এখনও বকেয়া।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সুতরাং যেটা মনে রাখতে হবে, তুমি গঙ্গা ভাঙন আটকাতে পারবে না। রোজ হতেই থাকবে। নদী-প্রকৃতি-আকাশ আমাদের হাতে নেই। গঙ্গার ভাঙন এক পাড় গড়ছে, আরেক পাড় ভাঙছে।” এখানে অন্য পদ্ধতি করার কথা বলেন মমতা। সামশেরগঞ্জে যাঁরা গঙ্গার পাশে থাকে, বা যাঁদের বাড়ি- আজ না হোক আগামী পাঁচ বছরে ভেসে যেতে পারে। এই সব পরিবারকে ডেকে তাঁদের যত জমি গিয়েছে ততটা তো দেওয়া যাবে না। তবে তাঁদের প্রাণে বাঁচাতে হবে। চরেও অনেকে বসে আছেন, চাষ করছেন। নদিয়াতেও এরকম পরিবার রয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে একটি টাস্ক ফোর্স তৈরির করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আমি তো নীতি আয়োগ থেকে শুরু করে সবাইকে বলেছি। কাউকে বলিনি তা তো নয়। যেটা আমাদের করতে হবে how to save the people and Ganga also। যাঁদের ডিপার্টমেন্টের কাজ কম আছে, তাঁদের নিয়ে টিম তৈরি করতে হবে। তাহলে মনে হয় ভালো হয়।” এরপরেই মুখ্যসচিবকে টাস্ক ফোর্স তৈরির নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সব স্কিমে যারা হেল্প করে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বিশ্ব ব্যাংকের মত সংস্থাকে বলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গঙ্গা ভাঙনে হাজার হাজার কোটি টাকা ঢেলে দেওয়ার মতো অবস্থা তো আমাদের নেই। কেন্দ্রের এক লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। একশো দিনের টাকাই দেয় না। এরপর রয়েছে বেতন আর পেনশন। বেতন পেনশন টিচিং নন টিচিং কত টাকা দিতে হয়।”
অর্থসচিব মনোজ পন্থ জানান, গত আর্থিক বছরে সরকারি বেতন বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ। নন গভমেন্ট হেড মেনে ৩৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। দুটো মিলিয়ে ৫৪ হাজার কোটি টাকা বেতন খাতায় যায়। পেনশন দিতে যায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। এই তিন মিলিয়ে ৭০ হাজার কোটি টাকা হল। এর ওপর কনট্র্যাক্ট চুয়াল আছে। সব মিলিয়ে আর্থিক বছরে মোট ১ লক্ষ ৩৫ হাজর কোটি টাকা খরচ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দিন দিন বেতনের টাকা বাড়ছে। এর পর দেনার টাকা। ফলে, কেন্দ্রের টাকা না পাওয়ায় রাজ্যের উপর আরও বোঝা চাপছে।
Order to form a task force to combat river erosion
Be the first to comment