সন্তোষ ট্রফিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা বাংলার দুই ফুটবলারকে চাকরি দিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৯ মে তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের ক্রীড়া এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে কেরলের জালে বল জড়িয়েছিলেন দিলীপ ওঁরাও। বাংলা টাইব্রেকারে কেরলের কাছে হেরে যাওয়ার ফলে সন্তোষ ট্রফি আসেনি এই বঙ্গে। নায়ক হতে পারতেন কিন্তু ফাইনালে হেরে যাওয়ায় সেই দিলীপ হয়ে যান ট্র্যাজিক নায়ক। নাগেরবাজারে থাকেন দিলীপ। দিলীপের বাবা পুরসভার সাফাই কর্মী। মা গৃহস্থ বাড়িতে রান্নার কাজ করেন। দিলীপের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এহেন দিলীপের ইচ্ছা একটাই ফুটবল খেলে রোজগার করলে বাড়ি বানাবেন।
দিলীপের অধিনায়ক মনোতোষ চাকলাদার সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেছিলেন। তাঁর বাবা কাঠের মিস্ত্রি। ব্যান্ডেলে বাড়ি মনোতোষের। ঘর খুবই ছোট। খুব কষ্ট করেই বোনের বিয়ে দিয়েছেন মনোতোষ। প্রতিমুহূর্তে দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই মনোতোষের। যে ক্লাব মনোতোষের যৌবনের তপোবন, বার্ধক্যের বারাণসী, সেই ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাবের কর্তা নবাব ভট্টাচার্ষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, ”এবার একটা চাকরি ওর দরকার।”
কেরল থেকে সন্তোষ ট্রফি খেলে ঘরে ফিরে মন ভাল করা দারুণ এক খবর পেলেন বাংলার অধিনায়ক মনোতোষ এবং নাগেরবাজারের দিলীপ। সন্তোষ কাঁপানো এই দুই ফুটবলারকে চাকরি দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ”দিলীপ ওঁরাও ও মনোতোষ চাকলাদার, এই দুই ফুটবলারকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। দু’ জনেই অত্যন্ত গরীব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। সংবাদমাধ্যম মারফত মুখ্যমন্ত্রী এদের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা জানতে পেরে নিজের কোটা থেকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।” নবান্নের তরফে দুই ফুটবলারের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
অবশেষে ওই দুই ফুটবলারের পরিবারের ‘আঁধার ঘরের প্রদীপ’ হয়ে দীপ জ্বালাবে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া চাকরি। ঘোচাবে অভাবের কালিমা।
Be the first to comment