মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার, নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ-সহ মোদি সরকারকে নিশানা করেন মমতা। প্রশ্ন তোলেন, মণিপুরের হিংসায় কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা কেন প্রকাশ করছে না কেন্দ্রীয় সরকার! মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের পড়ুয়াদের অগ্নিগর্ভ মণিপুর থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে।
বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রীয়দল চলে আসে। তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে ১৫১ টা টিম পাঠিয়েছে। অথচ এখন মণিপুরে কেন্দ্রীয় দল যাচ্ছে না কেন? তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বলেন, মণিপুরে যেভাবে হিংসা চলছে, যেভাবে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। কিন্তু তা নিয়ে বিজেপির কোনও হেলদোল নেই। তাদের নেতারা কর্ণাটকে ভোট প্রচারে ব্যস্ত। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ মানুষের জীবন।
অমিত শাহের বাংলায় আসার প্রসঙ্গে মমতা কটাক্ষ করে বলেন, বাংলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন, তাঁকে স্বাগত। কিন্তু মণিপুরের জন্য তাদের এক ঘণ্টা সময়ও ছিল না? মণিপুরে রক্তপাত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দল জনগণকে জাতপাতের ভিত্তিতে বিভক্ত করছে, এটি মানুষের তৈরি সমস্যা। মণিপুরের ঘটনা Man Maid। ওরা উত্তর-পূর্বে গিয়ে ভোট লুট করে আর নির্বাচনের পর তারা ভুলে যায়। এটা লজ্জাজনক যে ওরা কর্ণাটকে প্রচারে ব্যস্ত। চেয়ার আসে এবং যায় কিন্তু গণতন্ত্র এখানেই থাকে। তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এরা শুধু ইলেকশন বোঝে। ইলেকশন আসলে বলে তিনটে করে গ্যাস সিলিন্ডার দেব, আর ইলেকশন শেষ হয়ে গেলে কিছু দেয় না। সবকা সাথ সবকা বিকাশ নয়, সবকা বিনাশ।“
এর পাশাপাশি মণিপুর থেকে উদ্ধারের বিষয়ে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এই বিষয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। নম্বর- ০৩৩-২২১৪ ৩৫২৬, ০৩৩-২২৫৩ ৫১৮৫।
এখনও পর্যন্ত ১৮৫ জন সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। মণিপুর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলার সরকার। বিশেষ করে যাঁরা বিমান বন্দরের থেকে দূরে আছেন, তাঁদের বিষয়ে যাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই বিষয়ে মণিপুর সরকারকে সেফ প্যাসাজ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলার ২৫ জনকে নিয়ে আসা গিয়েছে। যাঁর মধ্যে ১৮ জন পড়ুয়া। এখনও ৬৪ জন পড়ুয়া মণিপুরে আটকে আছেন। কলকাতা হয়ে অন্য রাজ্যের যারা যাচ্ছে তাঁদেরও সহযোগিতা করছে রাজ্য। “অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান-সহ বিভিন্ন জায়গার যাঁরা আছেন, তাঁদের আমরা ট্রানজিট অ্যাকোমোডেশন দিচ্ছি।“
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অন্ধ্রপ্রদেশের ১৪০, রাজস্থানের ৩০ জন, তেলেঙ্গানার ২৬ জন আছে তাঁদের সব ব্যবস্থা আমরা করছি। যত্ন করে রাখা হয়েছে। তাঁদের সরকারের চিফ সেক্রেটারির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি যাতে তাঁরা তাঁদের নিয়ে যায়।“
Be the first to comment