ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভায় জেলা পরিষদ ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ত দফতরের টেন্ডার নিয়ে অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আর কত খাবে? তৃণমূল এত দিতে পারবে না।” প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই অভিযোগ জানান জেলা পরিষদের এক মহিলা কর্মাধ্যক্ষ। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো এবং জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্তের অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগের টেন্ডারে কারসাজি করেন ওই দুই সদস্য। তাঁদের ইচ্ছে মতো ব্যক্তি টেন্ডার না পেলে অন্তত ৭-৮ বার বরাত বাতিল করেন। আর এই কথা শোনার পরই মেজাজ হারান মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।
ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী সেই সদস্যদের প্রশ্ন করেন যে, “আর কত খাবেন? এবার কি হিরের চচ্চড়ি নাকি সোনার ডালনা খাবেন? এত দিতে পারবে না তৃণমূল। অনেক পেয়েছেন। আমরা এত দিতে পারব না।” এরপর উজ্জ্বল দত্তের নাম করে তিনি বলেন, “উজ্জ্বলের নামে আগেও অভিযোগ শুনেছি। এবার শেষবার সতর্ক করছি। না হলে গ্রেফতার করিয়ে দেব। আর শুভ্রা মহিলা হয়েও এত লোভ কীসের?” এরপরে অভিযুক্ত দুই কর্মাধ্যক্ষকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে মেয়েটাকে ভয় দেখাবে না।” তারপর ফের জেলা পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে মমতা বলেন, “আমি-আমি নয় আমরা। আমিত্ব ছাড়।”
এছাড়া এই প্রশাসনিক সভায় ঝাড়গ্রামে পর্যটকদের টানতে সেখানে আরও বেশি করে হোম স্টে গড়ে তোলার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। হোম স্টে বাড়ানোর জন্য পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে তিনি বলেন, “সেলফ হেল্প গ্রুপের মেয়েদের নিয়ে ক্যাম্প তৈরি করো। এই সব জায়গায় অনেক পর্যটক আসতে চায়। আগে এখানে মানুষ আসতেন শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য। কিন্তু, এখন মানুষ ঘুরতে আসে। এদিকে ঘুরতে এসে তাঁরা থাকার পান না। অনেক আদিবাসী ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না। তাদের এই পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করে দাও।”
প্রসঙ্গত, তিন দিনের জেলা সফরে মঙ্গলবারই মেদিনীপুর পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করেছেন প্রশাসনিক সভা। বুধবার কর্মিসভা করেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে এই সভা থেকেই জেলার পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতির সূত্র বেঁধে দিয়েছেন। কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে তৈরি করে দিয়েছেন নতুন স্লোগান। মেদিনীপুর থেকে বুধবার দুপরেই ঝাড়গ্রামে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে প্রসাশনিক বৈঠক হয়। আগামীকাল একই জায়গায় দলের কর্মীদের নিয়ে সভা করবেন তিনি।
Be the first to comment