‘আমাকে গ্রেফতার না করলে CBI দফতর ছাড়ব না’, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতারি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। এবার মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় সুর চড়ালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মুখ্যমন্ত্রী আইন ভাঙছেন এই অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় FIR দায়ের করেছেন দিলীপ ঘোষ।
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ওনার স্বভাব রয়েছে যেখানে সেখানে গিয়ে বসে পড়ার, অরাজকতা সৃষ্টি করার। উনি গায়ের জোরে সবকিছু করার চেষ্টা করেন। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এখন আমাদের পার্টি অফিসে হামলা চালাবে। উনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ওনার দায়িত্ব আইন- শৃঙ্খলা রক্ষা করা। কিন্তু উনিই আইন ভাঙছেন। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে!’
অভিযোগ পত্রে দিলীপ ঘোষ লিখেছেন,’বহিরাগত’ শব্দটি নির্বাচনী প্রচারে একাধিকবার ব্যবহার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে অন্যান্য রাজ্যে যে সমস্ত বাঙালিরা থাকেন তাঁরা মানসিকভাবে প্রভাবিত হচ্ছেন। প্রচারের সময় মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছিলেন, দাবি দিলীপের। ২মের পর ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর শাস্তির দাবি করেছেন এই BJP নেতা। মুখ্যমন্ত্রীর ‘খেলা হবে’ স্লোগানে সাড়া দিয়ে বহু রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, দাবি এই নেতার।
এদিকে এই চার হেভিওয়েটের গ্রেফতারি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফসল, দাবি তৃণমূল নেতাদের। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই পদক্ষেপ নিয়েছে CBI। এক্ষেত্রে প্রতিহিংসা হলে গেল! কার দোষ সেটা জানা উচিত। যাঁরা কোর্টকে মানেন না, সংবিধানকে মানেন না, তারাই এই ধরনের কথা বলছেন। রাস্তায় নেমে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। রাজ্যে যখন করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ বিধিনিষেধ জারি রয়েছে তখন কীভাবে এত মানুষ রাস্তায় জমায়েত করছেন?’
এদিকে নারদ মামলায় CBI-এর গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুলেছেন নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীও তো আমার থেকে টাকা নিয়েছেন। সেটা রেকর্ড করাও হয়েছে। তাহলে তাঁকে গ্রেফতার করা হল না কেন? সবার জন্যই এক বিচার হওয়া দরকার।’ এবার এই প্রশ্নের পালটা জবাব দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘ শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়কে যখন CBI ডেকেছে,তিনি হাজিরা দিয়েছেন। ওনারা দোষী কিনা তার বিচার আদালত করবে।’
প্রসঙ্গত, নারদ কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী তথা বর্তমান BJP বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ও BJP সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়েরও। কিন্তু, তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
Be the first to comment