ইয়াসের বিপর্যয় নিয়ে রিভিউ মিটিং। হওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু তাতে কেন উপস্থিত কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের ‘স্থানীয় বিধায়ক’? মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে কলাইকুণ্ডার বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুভেন্দুর নাম না করে চিঠিতে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কলাইকুণ্ডার বৈঠকে যে কোনও বিধায়ক থাকবেন, তা আদৌ তাঁকে জানানো হয়নি। প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের মাঝে তাঁর উপস্থিতির প্রয়োজন কোথায়, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। মোদীকে লেখা পাঁচ পাতার চিঠিতে যে ১৩টি প্রসঙ্গ তিনি তুলে ধরেছেন, তার ৯ নম্বর প্রসঙ্গে মমতা কলাইকুণ্ডার বৈঠক তৈরি হওয়া বিতর্কের উত্থাপন করেছেন তিনি। এবং সেখানেই এই কথাগুলো উল্লেখ করেছেন।
মমতা লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের যে পরিবর্তিত কাঠামো আমাদের জানানো হয়েছিল, সেখানে আপনার দলের এক স্থানীয় বিধায়কের নাম ছিল। কিন্তু বিপর্যয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর রিভিউ মিটিংয়ে কোনও স্থানীয় বিধায়কের উপস্থিতি এক্তিয়ার বর্হিভূত।” এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সেদিন অর্থাৎ ২৮ মে সকালেই নবান্ন চত্বরে একটি খবর হাওয়ায় ভাসতে শুরু করেছিল। দুপুরে রিভিউ বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি নবান্ন তরফে এমনটাও শোনা গিয়েছিল, যদিও ওই বৈঠকে শুভেন্দু থাকেন, তাহলে যোগ দেবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জল্পনা সত্যি করে তেমনটাই হয়েছিল সেদিন।
২৮ মে কলাইকুণ্ডায় বৈঠক চলাকালীন তিনি ঘরে ঢুকে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষয়ক্ষতির লিখিত খতিয়ান তুলে দিয়ে দিঘার উদ্দেশে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও এই বিষয়টিও চিঠিতে স্পষ্ট করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে জানান, ২৮ তারিখ অর্থাৎ বৈঠকের দিন ইয়াস বিপর্যস্ত এলাকা আকাশপথে ঘুরে দেখার কথা ছিল তাঁর। সে কর্মসূচি আগেই নির্ধারিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেকথা স্পষ্ট উল্লেখ করেন চিঠিতে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই যে তিনি দিঘা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, তা চিঠিতে আরও একবার স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
আর তারপরের ঘটনা পর্যায়ক্রমে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব। অর্থাৎ সেই রাতেই প্রধানমন্ত্রীর তরফে চিঠি আসে, তাতে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে নর্থ ব্লকে রিপোর্ট করতে বলা হয়। কিন্তু দিল্লিতে যাননি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ‘রাজ্য কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই সময় কোনও মতেই মুখ্যসচিবকে ছাড়া সম্ভব নয়’। বিশ্লেষক তথা প্রাক্তন শীর্ষ আমলারা বলছেন, এতে তুঙ্গে উঠল কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত।
Be the first to comment