আমফান পরবর্তী সময় যা হয়নি, ইয়াসের পর সেটাই দেখা গেল। অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেও দেখা গেল রাজনীতির আঁচ। নরেন্দ্র মোদীর রিভিউ বৈঠকে যোগ দিলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই সাক্ষাতও খুব একটা মসৃণ হয়নি। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, মমতার জন্য প্রায় আধঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় মোদীকে। এমনকি, পূর্ব নির্ধারিত কিছু পরিকল্পনাও বাতিল করতে হয়।
বিশ্বস্ত সূত্র মারফৎ খবর, রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কতটা তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট নেওয়ার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। নমো প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেন বলে জানাচ্ছে কেন্দ্রের একটি শীর্ষ সূত্র। আজকের রিভিউ বৈঠকে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি বলেই জানানো হয়েছে ওই একই সূত্র মারফৎ।
প্রোটোকল অনুযায়ী, এই ধরনের সফরের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কোথাও পৌঁছনর পর তাঁকে সবার আগে স্বাগত জানান রাজ্যপাল, এরপর মুখ্যমন্ত্রী। গতবার আমফানের পর যখন মোদী এসেছিলেন তাঁকে সবার আগে স্বাগত জানিয়েছিলেন মমতাই। দু’জনে একসঙ্গে আকাশপথে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনও করেছিলেন। কিন্তু এ বার ছেদ পড়ল সেই প্রথায়।
সূত্রের খবর, শুক্রবার ওড়িশা থেকে কলাইকুণ্ডায় পৌঁছে যান মোদী। প্রধানমন্ত্রী পৌঁছনর বেশ কিছুক্ষণ পর সেখানে গিয়ে তাঁর হাতে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য তুলে দেন মমতা। তবে কেন্দ্রের শীর্ষ সূত্র জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী পৌঁছনর প্রায় ৩০ মিনিট পর কলাইকুণ্ডায় যান মমতা। এতে ৫-১০ মিনিটের হেরফের হলেও হতে পারে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। তারপর অবশ্য মমতা আসেন, ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ ফাইলের আকারে তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। সেই সময় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী ও ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রিভিউ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র আরও জানাচ্ছে, ঠিক কোন কোন জায়গায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে একটি বিস্তারিত পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার কথা ছিল রাজ্যের। রাজ্যের মুখ্যসচিব বা স্বরাষ্ট্র সচিবের তরফে এই প্রেজেন্টেশন দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু সেটাও সম্ভব হয়নি। রাজ্যের দুই উচ্চপদস্থ আমলাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এসে ঢোকেন, তাঁর সঙ্গেই বেরিয়ে যান। এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সামনে এই ধরনে ‘অভব্য আচরণ’ করেননি বলেই দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সূত্রে।
Be the first to comment