৮ তারিখ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কিন্তু তার আগে পায়ে ও কোমরে চোট নিয়ে বাড়িতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি রাজ্যের মানুষের কাছে তৃণমূলকেই তিন ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানালেন। গ্রাম সভা, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ- ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের এই তিন ক্ষেত্রেই তৃণমূল প্রার্থীদের জেতানোর আবেদন জানান দলের সভানেত্রী। তাঁর কথায় “আমরা না জিতলে এলাকায় উন্নয়ন হবে কি করে?”
এক্ষেত্রে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে কন্যাশ্রী, কৃষকবন্ধু, যুবশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী- সব ক্ষেত্রেই মানুষের কাছে উন্নয়ন পৌঁছে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভোটে জিতলেই লক্ষ্মীর ভান্ডার দেওয়া হবে। বিরোধীরা তাঁর সেই প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। অথচ তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার তিন মাসের মধ্যেই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু হয়ে গিয়েছে রাজ্যে। এখন বিজেপিও লক্ষ্মীর ভান্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি হচ্ছে টুবলিবাজ। আমরা রাজ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে কন্যাশ্রী, মেধাশ্রী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, কৃষক বন্ধু সব কিছুই দিয়েছি। কোনও জায়গা বাকি নেই।” সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই তিনটে ক্ষেত্রেই তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান মমতা। তিনি বলেন, যদি কেউ মনে করেন গ্রামসভায় তৃণমূলকে ভোট দেবেন কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতিতে দেবেন না সেক্ষেত্রে উন্নয়ন থমকে যাবে। মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছবে না। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকেই তিন ভোট দেওয়ার আবেদন জানান দলের সভানেত্রী।
এর পাশাপাশি তৃণমূল থেকে বেরিয়ে যাঁরা নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ছেন, তাঁদের উদ্দেশেও এদিন দলনেত্রী বলেন, “নির্দলদের উদ্দেশে বলছি। জিতে লঙ্কা কাণ্ড বাঁধাতে পারবেন না। রাজ্য সরকারে আমরাই থাকব।”
পঞ্চায়েতে এবার অনেক বর্তমান বা পুরনো সদস্য টিকিট পাননি। নবজোয়ার কর্মসূচির ভোটাভুটিতে অনেকের নাম বাদ গিয়েছে। ফলে কয়েক হাজার নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন পেশ করেছেন। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “অনেকে যোগ্য হলেও টিকিট পাননি। তাঁদের একটা তালিকা আমি তৈরি করে রেখেছি। কিন্তু যাঁরা নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের বলছি লিফলেট ছড়িয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। কারণ ভোটে জিতলেও রাজ্য সরকারে আমরাই থাকব।”
Be the first to comment