রাজ্যে বালির মতো খনিজ সম্পদ মাফিয়াদের রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল নবান্নে। সেখানে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পরই স্যান্ড মাইনিং পলিসি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিন ‘স্যান্ড মাইনিং পলিসি’র ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। জেলা শাসকদের নিলামের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মিনারেল মাইনিং পরিষদের হাতে সেই দায়িত্ব তুলে দিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বালি, সুরকি, মাটি, পাথর ও কয়লার মতো খনিজ সম্পদ মাফিয়ারা লুঠে নিচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেকারণে প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ বাঁচাতে নয়া এই পদক্ষেপের ঘোষণা করলেন তিনি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘ খনির নিলাম থেকে কোনও কোনও অসাধু ব্যবসায়ী বাড়তি মুনাফা করছে। এটা বরদাস্ত হবে না।
আমাদের কাছে অনেক সময় স্থানীয় মাফিয়াদের দৌরাত্মের অভিযোগ আসে। জেলা শাসকরা নিলামের জন্য ৫ বছরের বরাত দিলেও তার চার গুণ বেশি খনিজ সম্পদ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে মাফিয়ারা। এতে রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। এই স্যান্ড মাইনিং পলিসি আনুয়ায়ী এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মিনারেল মাইনিং কমিটিকে। তাছাড়া রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থ সচিবের নজরদারিতে এবার এই নিলামের প্রক্রিয়া চালাবে মাইনিং কমিটি। শুধু তাই নয়, নিলাম প্রক্রিয়া চলাকালীন সিসিটিভি থেকে শুরু করে সমস্ত ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা হবে।’
উল্লেখ্য, এর আগে এই সমস্ত খনিজ সম্পদের নিলামের দায়িত্ব ছিল সংশ্লীষ্ট জেলা শাসকের উপর। সেখানে ৫ বছরের মেয়াদে চার গুণ বেশি খনন করে প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠের অভিযোগ বরাবরই উঠে আসছে। এবার যাতে খনিজ সম্পদ নিলামের সময় বেআইনিভাবে বাড়তি অর্থ কেউ লুঠ করতে না পারে, সেজন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, এবার থেকে কোথাও কোনও বালি অথবা কয়লা লুঠের খবর জানতে পারলেই যে কেউ অনলাইনের মাধ্যমে সরকারের কাছে নালিশ করতে পারেবন। এরাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ এভাবে লুঠ করা যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভোটের আগেই কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে নেমে ইডি, সিবিআই সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল। এই কেলেঙ্কারিতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাদের যোগ কতটা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এমনকী এ নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই।
দলকে এভাবে কয়লা কাণ্ডে বিদ্ধ হতে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই তৃতীয়বার সরকার গঠন করার পর বিষয়টি নিয়ে নিজেই কড়া পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি স্পষ্ট বার্তা দেন যে, স্থানীয় প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করা যাবে না।
Be the first to comment