গুড়াপ কাণ্ডে ধর্ষক ও হত্যাকারীর ফাঁসি সাজার পরই পুলিশের প্রশংসা করলেন মমতা – অভিষেক

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- হুগলির গুড়াপে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীকে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) চরম সাজা শুনিয়েছে চুঁচুড়ার পকসো আদালত। আর ওই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি হুগলি জেলা পুলিশের তৎপরতরও প্রশংসা করেছেন তিনি।

Today, the Court has pronounced death sentence for the convict who had raped and murdered the small girl of Gurap and I thank the Judiciary for that.

রায় ঘোষণার খানিকবাদেই তার এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘গুড়াপে এক শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় আজ আদালত দোষীকে চরম শাস্তি শুনিয়েছে। এর জন্য বিচার ব্যবস্থাকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশপাশি হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ অঅভিযোগ পাওয়ার পরেই যেভাবে অতি দ্রুততার সঙ্গে মামলার তদন্তে নেমে অপরাধীকে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করেছে, তার জন্যও প্রশংসা করছি।’ নিহত শিশুর পরিবারের পাশে থাকার পাশাপাশি তিনিও যে মর্মন্তুদ ঘটনায় বিস্মিত এবং নির্যাতিতার পরিবারের প্রতি সমব্যাথী তাও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেই সঙ্গে খুনি ও ধর্ষকদের যে বর্তমান সমাজ ও পৃথিবীতে কোনও জায়গা নেই সেই কথা উল্লেখ করে মমতা লিখেছেন, ‘একজন ধর্ষকের এই পৃথিবীতে কোনও জায়গা নেই। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে লড়াই চালাতে হবে এবং কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে। অপরাধীদের ক্ষমা করার মানসিকতা যেন কারও না থাকে। এমন নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের একজনও যেন বিচারের বাইরে না থাকে।’
অন্যদিকে, এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি হুগলি জেলা পুলিশের প্রশংসা করেছেন। এদিন তিনি নাম না করে বিরোধীদের কটাক্ষ করে লেখেন, ‘যখন অন্যরা নারী সুরক্ষার ক্ষেত্রে কেবল কথার ফুলঝুরি ছড়ায়, তখন বাংলা অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে।’

এদিন অভিষেক তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘বাংলায় ন্যায়বিচার দ্রুত, সুনির্দিষ্ট এবং আপোষহীনভাবে প্রদান করা হয়। আজ হুগলি পকসো আদালত গুড়াপের নাবালিকা মেয়েটির ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত অপরাধীর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে। আমি হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশের দলকে, বিশেষ করে শ্রী কমনাশীষ সেন (আইপিএস)-এর নেতৃত্বাধীন তদন্তকারী দলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তাদের নিখুঁত তদন্ত, আদালতে অকাট্য প্রমাণ উপস্থাপন এবং ৫৪ দিনের মধ্যে বিচার ও দোষী সাব্যস্ত নিশ্চিত করার জন্য তাদের প্রশংসা প্রাপ্য।
শেষে তিনি লেখেন, ‘এটি একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে যে, যখন অন্যরা নারী সুরক্ষার ক্ষেত্রে কেবল কথার ফুলঝুরি ছড়ায়, তখন বাংলা অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৪ নভেম্বর হুগলির গুড়াপে এক পাঁচ বছরের শিশুকে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় প্রতিবেশি অশোককুমার সিং। সেই সময় বাজার করতে গিয়েছিলেন শিশুটির বাবা। বাড়ি ফিরে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে শুরু করেন খোঁজাখুঁজি। প্রতিবেশিরাও খোঁজাখুঁজিতে নেমে পড়েন। খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে অশোক সিংয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ছোট্ট শিশুটির রক্তাক্ত দেহ। ধনিয়াখালি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এমন হাড়হিম করা ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। চড়াও হন অভিযুক্তের উপর। অভিযোগ পেয়ে রাতেই ধর্ষক ও হত্যাকারী অশোককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন শিশুর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। ৯ ডিসেম্বর মামলায় চার্জশিট দাখিল করে হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ। ১১ তারিখ চার্জ গঠন হয়। ৫৪ দিনের মাথায় শুক্রবার চুঁচুড়ার পকসো আদালতের বিচারক চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তী দোষীকে চরম সাজা শোনান।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*