ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মণিপুর! মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের চূড়াচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুর জেলার মাঝে কোইরেনটাক অঞ্চলের একটি কুকি অধ্যুষিত গ্রামে হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। পাল্টা গুলি চালায় গ্রামরক্ষী বাহিনীও। গুলির লড়াইয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ মণিপুরের কুকি-জু গ্রামে হামলা করে দুষ্কৃতীরা।এলোপাথাড়ি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পাল্টা গুলি চালায় গ্রামের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা। গুলি লেগে মৃত্যু হয় ৩০ বছর বয়সী জাঙ্গমিনলুন গাঙ্গটে নামক এক স্থানীয় বাসিন্দার। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এর আগে রবিবার, মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন তিনটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ওই দিনই রাত দুটো নাগাদ রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ডিরেক্টর কে রাজোর বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে দুষ্কৃতীরা তিনটি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়।
এদিকে, গত ৩ মে মণিপুরে অশান্তি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম বিধানসভার অধিবেশন বসে মঙ্গলবার। ১১ মিনিটের অধিবেশনে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফেরানোর জন্য ‘আলোচনা এবং সাংবিধানিক উপায়ে’ প্রস্তাব পাশ করা হয় বিধানসভায়। যদিও নিরাপত্তাগত কারণে রাজধানী ইম্ফলে গিয়ে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দেননি দশ জন কুকি-জো গোষ্ঠীর বিধায়ক।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।
Be the first to comment