বিহারের প্রাক্তন মন্ত্রীর নামে বেরিয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। এদিকে গা ঢাকা দিয়ে আছেন তিনি। পুলিশ নাকি হাজার চেষ্টা করেও খুঁজে পাচ্ছে না তাঁকে। পর পর তিন দিন শুনানিতে একথা শোনার পরে রীতিমতো রেগে যান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। তিনি নির্দেশ দেন, অবিলম্বে ওই প্রাক্তন মন্ত্রীকে খুঁজে বার করতে হবে। না হলে ২৭ নভেম্বর বিহারের পুলিশ প্রধানকে কোর্টে হাজির হতে হবে। তিনি নিজের মুখে ব্যাখ্যা করবেন, কেন এক অভিযুক্তকে পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না। অবশেষে মঙ্গলবার প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জু বর্মা আত্মসমর্পণ করলেন বেগুসরাই আদালতে।
গত এপ্রিলে টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের গবেষকরা বিহার সরকারকে রিপোর্ট দেন, মজজফরপুরের এক শেল্টার হোমে নিয়মিত মেয়েদের ওপরে যৌন নিপীড়ন চালানো হয়। অন্তত ৪০ টি মেয়ে এইভাবে নিপীড়িত হয়েছে। ওই হোমটি চালাতেন ব্রজেশ ঠাকুর নামে এক ব্যক্তি।
শেল্টার হোমে অত্যাচারের কথা জানাজানি হতে বিহারে তো বটেই, সারা দেশে হইচই পড়ে যায়। ব্রজেশ ঠাকুর সহ মোট ১১ জন গ্রেফতার হন। তদন্তে জানা যায়, রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মঞ্জু বর্মার স্বামী চন্দ্রশেখর অনেকবার ওই শেল্টার হোমে গিয়েছেন। ব্রজেশের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল।
এর পরে মঞ্জু বর্মা ইস্তফা দেন। গত অগাস্টে তাঁর বাড়ি তল্লাশি করতে গিয়ে পুলিশ ৫০টি তাজা কার্তুজ পায়। প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে জামিন অযোগ্য মামলা করা হয়। তখন তিনি গা ঢাকা দেন।
তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শুনে বিচারপতিরা মন্তব্য করেন, মঞ্জু বর্মা কি আইনের উর্ধ্বে? বিহার সরকার ওই মামলায় যেভাবে তদন্ত করেছে তাতেও সন্তুষ্ট হয়নি সুপ্রিম কোর্ট।
পর্যবেক্ষকদের একটি মহলের সন্দেহ ছিল, রাজনীতিকদের একাংশের সহায়তায় লুকিয়ে আছেন মঞ্জু। পুলিশ জানে তিনি কোথায় আছেন। কিন্তু চাপের মুখে তাঁকে ধরতে পারছে না। তাঁকে ধরলে ওই কেলেঙ্কারিতে যুক্ত আরও অনেকের নাম ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই তাঁকে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করা হচ্ছে।
কিন্তু তাঁকে খুঁজে না পাওয়া গেলে বিহারের পুলিশ প্রধানকে কোর্টে উপস্থিত হয়ে জবাবদিহি করতে হত। তা বিহার সরকারের পক্ষে খুবই লজ্জার ব্যাপার হত সন্দেহ নেই। আত্মসমর্পণ করে মঞ্জু সরকারকে সেই লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।
Be the first to comment