বিদিশা দে মজুমদারের মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই আরও এক মডেল-অভিনেত্রীর মৃত্যু সংবাদ। শুক্রবার সকালে পাটুলি থেকে উদ্ধার হল বিদিশার বান্ধবী মঞ্জুষা নিয়োগীর ঝুলন্ত দেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন মঞ্জুষা। জানা গিয়েছে, বিদিশার ভাল বন্ধু ছিলেন মঞ্জুষা। বৃহস্পতিবার বিদিশার মৃত্যুর খবর পেয়ে অত্যন্ত ভেঙে পড়েন তিনি। দিনভর চাপা কষ্টে ছিলেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে পাটুলিতে নিজের বাড়িতে চলে এসেছিলেন। এরপর রাতে সম্ভবত নিজের ঘরে আত্মঘাতী হন। শুক্রবার ভোরে বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মেয়ের এহেন মর্মান্তিক পরিণতিতে হতবাক পরিবারের সদস্যরা। মায়ের কান্না বাঁধ মানছে না। বিদিশার জন্য শোকেই কি মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল? তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না কেউ।
থিয়েটার অভিনেত্রী হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন গড়িয়ার মেয়ে মঞ্জুষা। হরিমতী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে বায়োসায়েন্স নিয়ে ভরতি হন মডেল-অভিনেত্রী। পাশাপাশি থিয়েটারে অভিনয় চলত। সেখান থেকেই টলিউডে পা। মাস ছয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল মঞ্জুষা। শ্বশুরবাড়ি খুব ভাল বলে জানাচ্ছেন তাঁর মা। বিয়ের পরও নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ছোটপর্দার ধারাবাহিকে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে দর্শকদের পরিচিতি পান মঞ্জুষা। তবে মূলত মডেল হিসেবেই নিজের কেরিয়ারের পথে এগিয়ে চলেছিলেন। ‘ব্রাইডাল শুট’-এর জগতে বেশ পরিচিত মুখ মঞ্জুষা নিয়োগী। তবে সম্প্রতি হাতে কাজ একটু কম ছিল তাঁর। সে কারণে খানিকটা অবসাদে ভুগছিলেন।
শুক্রবার সকালে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর মঞ্জুষার মায়ের মুখে কেবলই বিদিশার কথা শোনা গেল। মা বলছেন, ”মেয়ে বিদিশার খুব ভাল বন্ধু ছিল। সবসময়ে বিদিশার কথা। ওর ইচ্ছে ছিল, মডেলিং করেই খুব বড় হবে। বিদিশার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই আরও ভেঙে পড়ল। আমাকে বারবার বলছিল, কেন এভাবে চলে গেল বিদিশা? তবে ও যে এমনটা করবে, ভাবতেই পারিনি। আসলে এদের খুব লোভ। পল্লবী, বিদিশা, মঞ্জুষা – সবার খুব লোভ ছিল। পয়সার হাতছানিতে ওরা বাকি সব ভুলে গেল।” মায়ের আরও বক্তব্য, মঞ্জুষার মৃত্যুর পিছনে অন্য কেউ নয়, নিজের দোষেই নিজের মৃত্যু ডেকে এনেছে মেয়ে। অসহায় মায়ের চোখের জল বাঁধ মানছে না। তার মাঝেও তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে গড়ফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ পল্লবী দে’র মৃতদেহ। সেই মৃত্যুর তদন্ত চলছে এখনও। এরপর বৃহস্পতিবার দমদমের ভাড়াবাড়ি থেকে মডেল বিদিশা দে মজুমদারের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। আর শুক্রবার ঠিক একইভাবে উদ্ধার হল আরেক মডেল-অভিনেত্রীর নিথর দেহ। বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় পরপর এতজনের মৃত্যু ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছে।
Be the first to comment