রোজদিন ডেস্ক :-
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি সংহতির বার্তা দিতে কিছু দিন আগেই একাধিক সরকারি হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরা ‘গণইস্তফা’-র সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু ‘গণইস্তফা’ সরকারের কাছে কোনও গ্রাহ্য পদত্যাগ নয়। শনিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে একথা জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “প্রতিটি ক্ষেত্রেই ‘গণইস্তফা’-র কথা উল্লেখ রয়েছে। সার্ভিস রুল অনুসারে, ইস্তফাপত্র অবশ্যই ব্যক্তিগত ভাবে দিতে হয়। না হলে সেটি পদত্যাগপত্র নয়। এই ‘গণইস্তফা’ কোনও গ্রাহ্য পদত্যাগ নয়। এই বিষয়ে সরকার বিভ্রান্তি দূর করতে চায়। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে এগুলি জমা পড়েছে।”
আরজি কর এবং রাজ্যের অন্যান্য হাসপাতাল মিলিয়ে একাধিক ‘গণইস্তফা’-র চিঠিতে এখনও পর্যন্ত প্রায় দুশো সই জমা পড়েছে বলেও সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন আলাপন।
প্রসঙ্গত, ‘গণইস্তফা’-র এই পদক্ষেপ প্রথম শুরু হয়েছিল আরজি কর হাসপাতাল থেকে। পরে কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনাল মেডিক্যাল, এসএসকেএম হাসপাতাল, সাগর দত্ত মেডিক্যাল, এনআরএস-সহ বিভিন্ন হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারেরাও একই পথে হেঁটেছিলেন। শুরুটা হয়েছিল গত মঙ্গলবার। আরজি কর হাসপাতালের ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার ‘গণইস্তফা’ দিয়েছিলেন। ধীরে ধীরে সেই আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলাগুলিতেও। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও গত বুধবার অন্তত ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন। একের পর এক সরকারি হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তারদের ‘গণইস্তফা’-র পর থেকেই সাধারণ মানুষের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছিল। এই আবহেই গত ৮ অক্টোবর নবান্নে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমেরা। ওই বৈঠক শেষে চিকিৎসকদের ‘গণইস্তফা’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমেই দেখেছি চিকিৎসকেরা গণইস্তফা দিয়েছেন। তবে আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত কোনও কিছু এসে পৌঁছয়নি।’’ ওই সময়েই নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল, সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কিছু নিয়ম আছে। সেই নিয়ম মোতাবেকই ইস্তফা দিতে হয়। কেউ ইস্তফা দিতে চাইলে হুট করে তা করতে পারেন না। অনেকগুলি পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হয়। সেই পদ্ধতি না মানলে ইস্তফা গৃহীত হয় না। চিকিৎসকদের গণইস্তফা নিয়ে তাই এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ নবান্ন।
Be the first to comment