জমি সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনা করতে ছয় জুলাই সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের বৈঠকে ডাকলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সম্প্রতি পুরুলিয়া জেলায় গিয়ে জমি মিউটেশন-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জমি সমস্যা সমাধানের জন্য আলাদা কমিটি গঠন করার কথা বলেন। সেইমতো নবান্ন জানতে চাইছে এই মুহূর্তে কোন জেলায় কত শতাংশ জমির মিউটেশন আটকে রয়েছে। আর সে কারণেই আগামী ৬ জুলাই নবান্নে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকরা ছাড়াও থাকবেন সমস্ত জেলার ডিএলআরওরা।
সম্প্রতি পুরুলিয়া সফরে গিয়ে ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দফতরের কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভূমি দফতরের কিছু অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও জমি পরিষেবা নিয়ে জেলায় জেলায় ভূমি বিভাগের এক শ্রেণির কর্মী-অফিসারের অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ আসছে প্রায় নিত্যদিন। বিষয়টি এমনই গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তিনি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে এই বিষয়ে নজরদারি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সেইমতো ব্লক থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত ভূমি দফতরের কার্যালয়গুলিতে পরিষেবা নিশ্চিত করতে নজরদার কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
এই কাজে যুক্ত করা হচ্ছে পুলিশকেও। সামগ্রিক নজরদারির ভার ন্যস্ত হয়েছে জেলাশাসকের উপরে। একই ভাবে নজরদারি কমিটি গড়া হচ্ছে ব্লক স্তরেও। এ ক্ষেত্রে নজরদারি কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্লক উন্নয়ন আধিকারিককে (বিডিও)। ব্লক স্তরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসার হবেন কমিটির আহ্বায়ক। সদস্য হবেন সংশ্লিষ্ট থানার আইসি অথবা ওসি। সপ্তাহে এক দিন সমন্বয় বৈঠক করবেন কমিটির সদস্যেরা। ব্লক স্তরে বকেয়া থাকা জমির মিউটেশন-কনভারশনের নিষ্পত্তি, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং ভূমি দফতরে জমা পড়া অভিযোগের মীমাংসা, পাট্টা বণ্টন, আদিবাসীদের জমির দখল ঠেকানো, স্থানীয় ভূমি দফতরের অফিস ঘিরে অনৈতিক কার্যকলাপ, বালি-পাথর-মাটি কাটা, অবৈধ ভাবে জলাজমির চরিত্র বদলানোর মতো ঘটনার উপরে নজর রাখবে ওই কমিটি।
মোটের উপর এই সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই ৬ জুলাই বৈঠক ডাকা হয়েছে। আর এই বৈঠক থেকেই ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দপ্তরের নজরদার কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।
Be the first to comment