রামমন্দির নিয়ে চাপের মুখে পড়ে বিরোধী দল কংগ্রেসের ওপরে দোষ চাপাল বিজেপি। রবিবার একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, কংগ্রেস আদালতে অযোধ্যা মামলার শুনানি পিছিয়ে দিতে চায়। অন্যদিকে বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে বলেন, বিজেপি যদি নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে পারত তাহলে বহুদিন আগে রামমন্দির তৈরি হয়ে যেত। কংগ্রেসই মামলা পিছিয়ে দিচ্ছে।
অমিত শাহের কথায়, আমরা যদি নিজেদের পরিকল্পনামতো কাজ করতে পারতাম, তাহলে অনেক আগেই রামমন্দির বিতর্কের সমাধান হয়ে যেত। অযোধ্যায় রামমন্দিরও তৈরি হয়ে যেত। বিজেপি সবসময় চায়, অযোধ্যা নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শুনানি হোক। কিছুদিন আগে কংগ্রেসের নেতা কপিল সিবাল সুপ্রিম কোর্টে বলেছেন, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরেই অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি হওয়া উচিত। এমন একটি সংবেদনশীল বিষয়ে কপিল সিবাল কি রাহুল গান্ধীর অনুমতি ছাড়াই কথা বলেছেন?
রবিবার রাজস্থানের আলোয়ার জেলায় এক নির্বাচনী সভায় মোদী বলেন, কংগ্রেস বহু দশকের পুরানো ওই মামলাটি পিছিয়ে দিতে চায়। বিচারবিভাগকেও তারা রাজনীতির মধ্যে টেনে এনেছে। বিচারবিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করছে।
গত রবিবার অযোধ্যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্ম সংসদ উপলক্ষে কয়েক হাজার ভক্ত উপস্থিত হন। সেই সঙ্গে যান শিবসেনা প্রধান উদ্ধব থ্যাকারে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, শিবসেনা সহ বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন বিজেপির ওপরে চাপ দিচ্ছে, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য অধ্যাদেশ জারি করা হোক। আরএসএস হুমকি দিয়েছে, রামমন্দির নির্মাণের জন্য প্রয়োজনে ১৯৯২ সালের মতো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
হিন্দুদের একাংশ বিশ্বাস করেন, যেখানে বাবরি মসজিদ ছিল, সেখানেই ত্রেতাযুগে রামচন্দ্র জন্ম নিয়েছিলেন। সেখানে একটি রামমন্দির ছিল। ষোড়শ শতাব্দীতে সেই রামমন্দির ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর কয়েক হাজার করসেবক বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে। তার পরে দেশ জুড়ে দাঙ্গাহাঙ্গামা ছড়িয়ে পড়ে।
২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে গত কয়েক মাস ধরে রামমন্দির ইস্যুতে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। উত্তরপ্রদেশ সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল, ওই মামলার শুনানি হোক দ্রুত। কিন্তু বিচারপতিরা সেই অনুরোধ মানেননি। আগামী জানুয়ারির আগে শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অমিত শাহ বলেছেন, আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যা মামলায় শুনানি হওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। ব্যাপারটা আমাদের হাতে নেই। মামলার তারিখ আমরা ঠিক করি না।
Be the first to comment