মোদি পদবি মামলায় স্বস্তিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে সুরাট আদালতের সাজার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হল। ২০১৯ সালে মোদি পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে মানহানির মামলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। চলতি বছরই গুজরাটের সুরাট আদালত ওই মামলায় রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং দুই বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয়। সেই সাজায় স্থগিতাদেশ চেয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সোনিয়া তনয়। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ওয়েনাড়ের বরখাস্ত সাংসদ রাহুল গান্ধীর পদ ফিরে পাওয়ার সম্ভবনাও প্রকট হল।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে মোদি পদবি মানহানি মামলায় রাহুল গান্ধীর সাজার শুনানিতে বলা হয়, ওই মামলায় রাহুল গান্ধীকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না। বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি পিএস নরসিমহা ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। রাহুল গান্ধীর তরফে উপস্থিত আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি এদিন শীর্ষ আদালতে জানান, মোদি পদবি নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী যে মন্তব্য করেছিলেন, তা সমাজবিরোধী অপরাধ নয়।এরপরই অভিষেক মনু সিংভি প্রশ্ন তোলেন, এটা কোনও ধর্ষণ বা খুনের অপরাধ নয়। তবে সর্বোচ্চ সাজা কেন দেওয়া হল?
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে মোদি পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা দু’বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। এরপর গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদীর দায়ের করা ওই অপরাধমূলক মানহানি মামলায় দোষী রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য তাঁকে ৩০ দিন সময় দিয়েছিলেন বিচারক। সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রায়ের ভিত্তিতে ২৪ মার্চ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করেছিলেন। এরপরই সুরাট কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গুজরাট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রাহুল গান্ধী। গত ৭ জুলাই গুজরাট হাইকোর্ট রাহুল গান্ধীর সাজার উপরে স্থগিতাদেশের আর্জি খারিজ করে দেয়। এরপর ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে গত ১৫ জুলাই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস নেতা।
তবে আইনজীবীদের একাংশের দাবি, শীর্ষ আদালত সুরাট ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাংসদ পদ ফিরে পেতে পারেন রাহুল। সুরাট দায়রা আদালত এবং গুজরাট হাই কোর্টের মতো সুপ্রিম কোর্টেও রাহুলের আবেদন খারিজ হয়ে গেলে তাঁর জেলে যাওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়ত। কিন্তু শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জেলযাত্রা থেকে রেহাইয়ের পাশাপাশি রাহুলের সাংসদ পদ ফেরানোর পথও মসৃণ হল বলেই মত আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
Be the first to comment