উয়েফা’র বর্ষসেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন কয়েকদিন আগে। এ বার ফিফা’র বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন লুকা মড্রিচ। অর্থাৎ দশ বছর পর মেসি, রোনাল্ডো ছাড়া অন্য কারও হাতে উঠল ব্যালন ডি’অর। সেই সঙ্গে তুলে দিয়ে গেল বেশ কিছু প্রশ্ন।
১০ বছর পর ফিফা’র বর্ষসেরা ফুটবলারের তালিকার প্রথম তিনে ছিলেন না মেসি। রোনাল্ডো থাকলেও হয়তো তিনি বুঝে গেছিলেন, এ বার তাঁর হাতে আর উঠবে না ট্রফি। তাই অনুষ্ঠানে আসেননি তিনি। ১০ বছর পর ফিফা’র এই অনুষ্ঠান হলো মেসি, রোনাল্ডো, নেমার ছাড়া। লাইমলাইটে এলেন সালাহ, মড্রিচের মতো তারকারা।
মেসি, রোনাল্ডো ছাড়া লুকা মড্রিচ কিংবা মিশরের মহম্মদ সালাহর মধ্যেই যে কারও মাথায় ফিফা বর্ষসেরার শিরোপা উঠতে চলেছে, প্রায় নিশ্চিত ছিল ফুটবল বিশ্ব৷ সোমবার রাতে লন্ডনে ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে প্রত্যাশিত ঘটনাটাই ঘটল। ২০১৮ সালের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হলেন লুকা মড্রিচ। সেই সঙ্গে ১০ বছর পর সিংহাসনচ্যুত হলেন মেসি-রোনাল্ডো।
অগস্ট মাসের শেষ দিকে রোনাল্ডো ও সালাহকে হারিয়েই উয়েফা-র বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতেন মড্রিচ। কেরিয়ারে প্রথমবার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতলেন লুকা মড্রিচ। টানা দুবারের পুরস্কারজয়ী ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিভারপুলের হয়ে অভিষেকে চমকে দেওয়া মহম্মদ সালাহকে হারিয়ে ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন ক্রোট মিডফিল্ডার।
১৯৫৬ সাল থেকে বর্ষসেরা ফুটবলার পুরস্কার দিয়ে আসছে ফিফা। ২০১০ সাল থেকে ফ্রান্স ফুটবলের ব্যালন ডি’অরের সঙ্গে মিলে সেটির নাম হয়ে যায় ফিফা-ব্যালন ডি’অর। ৬ বছর একসঙ্গে পথ চলার পর ২০১৬ সালে আবার আলাদা হয়ে যায় ফিফা আর ফ্রান্স ফুটবল। কিছু পরিবর্তন এনে ব্যালন ডি’অর দেওয়া হচ্ছে আগের মতোই। আঙ্গিকে বেশ পরিবর্তন এনে ফিফার পুরস্কার যাত্রা শুরু করেছে ‘দ্য বেস্ট’ নামে নতুন ভাবে। জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক, বিশ্ব জুড়ে ফিফা নির্বাচিত সাংবাদিক ও ফিফা ডটকমে ফুটবলপ্রেমীদের ভোটেই বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচন করা হয়।
রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর পেছনে গত তিনবারই নেপথ্যে ভূমিকা রেখেছেন মড্রিচ। প্রতিবারই বর্ষসেরা মিডফিল্ডারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু কখনওই তাঁর নাম বর্ষসেরাদের তালিকায় জায়গা পায়নি। মেসি-রোনাল্ডোর রাজত্বে এ বারের বিশ্বকাপ সব বদলে দিয়েছে। বিশ্বকাপে মদ্রিচ ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমবার শুধু ফাইনালেই তোলেননি, জিতেছেন বিশ্বকাপের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার।
আর এ দিনের পুরস্কারের পরেই প্রশ্ন উঠে গেল, তবে কি শেষ মেসি-রোনাল্ডো যুগ? গত ১০ বছর ধরে যেখানে বিশ্ব ফুটবল দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে এই দুই খেলোয়াড়ের কারণে, সেখানে এ বার তো ক্লাব ফুটবলেও তাঁরা ভিন্ন দেশে। মেসি-রোনাল্ডো দ্বৈরথ একমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সা-জুভেন্টাস মুখোমুখি হলে তবেই দেখা যাবে। যেভাবে জিদান, ব্রাজিলিয়ান রোনাল্ডোদের প্রস্থান মঞ্চে উত্থান হয়েছিল মেসি-রোনাল্ডোর, সেভাবেই কি এ বার তাঁদের প্রস্থান মঞ্চে নতুন তারকার জন্ম দিয়ে গেল? ক্রোয়েশিয়ার লুকা মড্রিচ বা মিশরের মহম্মদ সালাহ।
Be the first to comment