নারদ মামলায় গত শুক্রবার রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন মিলিয়ে ৪ হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার অন্তর্বর্তী জামিন মিলেছিল । কিন্তু সিবিআই এই মামলা এই রাজ্য থেকে অন্য কোথাও সরানোর যে আবেদন করেছিল, সেই ব্যাপারে শুনানি হওয়ার কথা ছিল আজ, সোমবার । বেলা ২ টো থেকে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে শুরু হয় শুনানি ৷ কিন্তু দীর্ঘ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীদের বাদানুবাদ চলল । মূল বিষয় নিয়ে কার্যত কোনও শুনানি হয়নি আজ । আগামিকাল সকালে ফের শুনানি এই মামলার ।
আজ মামলার শুনানির শুরুতেই রাজ্যের তরফ অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ডিভিশন বেঞ্চের এই মামলা শোনার কোনও সাংবিধানিক আইনসঙ্গত এক্তিয়ার নেই বলে দাবি করেন । এই বিষয়ে একাধিক যুক্তি দেন তিনি । তিনি বলেন, “মামলাটি এক বিচারপতির বেঞ্চর শোনার কথা ছিল ।” সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা রাজ্যের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে বলেন, “শুধুমাত্র টেকনিক্যাল ইস্যুতে কোনও মামলা না শুনে ফেলে দিতে পারে না আদালত । এর থেকে প্রমাণ হয় রাজ্য মামলার মূল বিষয়টি আদালতকে শুনতে দিতে চায় না ।”
তখন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, “এটা কোনও টেকনিক্যাল ব্যাপার নয়, এটা আইনি বিষয় ।” তখন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, “আদালত আবেদন গ্রহণ করতেই পারে । তিনি আরও বলেন সব পক্ষের সমস্ত বক্তব্য শোনা হবে চূড়ান্ত রায়দানের আগে।”
পাশাপাশি বিচারপতি সৌমেন সেন বলেন, ‘‘তিন বা বেশি বিচারপতি শুনতেই পারেন মামলা ।” ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল কিছুটা বিরক্তির সুরে বলেন, ‘‘প্রায় আধঘন্টা অপচয় করা হল এই বিষয়ে কথা বলে ।’’
এরপর বেঞ্চের বিচারপতি বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশ্যে জানতে চান, ‘‘আপনারা কি শুধু নিম্ন আদালত থেকে মামলা সরিয়ে নিয়ে যেতে চান ?’’ সলিসিটর জেনারেল এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘হ্যাঁ, সিবিআই চাইছে মামলা অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে যেতে ।’’ এরপর আজকের মতো শুনানি শেষ হয়ে যায় এই মামলার । এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল সকালে ফের শুনানি এই মামলার ।
প্রসঙ্গত, ১৭ মে সকালে নারদ মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ,ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷ ওইদিন সন্ধ্যাতেই কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিশেষ সিবিআই আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করলেও রাতে কলকাতা হাইকোর্ট সেই জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ আরোপ করে । সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টে ওই চার অভিযুক্তের জামিন খারিজের আবেদন জানিয়েছিল এবং নারদ মামলা এই রাজ্য থেকে অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করে ৷ কারণ, ওই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পর সিবিআই অফিসের সামনে যেভাবে বিক্ষোভ আন্দোলন হয়েছিল, তা নজিরবিহীন বলে সিবিআই আদালতে দাবি করে ।
অভিযুক্তরা গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন । কিন্তু নারদা মামলা এই রাজ্যে থাকবে নাকি ভিন রাজ্যে সরবে সেই বিষয়ের ওপর এখন শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে আগামিকাল ফের শুনানি ।
Be the first to comment