হাই প্রোফাইল নারদ মামলার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। আজ সেই মামলার শুনানির তৃতীয় দিন। এরই মধ্যে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে সিবিআই। আর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা চায় সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর মামলা শোনা হোক হাইকোর্টে। এই আর্জিতে রবিবার মধ্যরাতে আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে ও শুরু হয়েছে নারদ মামলার শুনানি।
গত শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে চার নেতাকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই বাড়ি ফিরেছেন ফিরহাদ হাকিম ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে ওই দিনের শুনানিতে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে রায় নিয়ে মত পার্খক্য হওয়ায়, মামলা যায় বৃহত্তর বেঞ্চে। আজ তাই পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে চলছে শুনানি।
বৃহত্তর বেঞ্চে রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল, বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহে সোমবার পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র ও আর এক নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। সিবিআইয়ের তরফে সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা ও অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করছেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পরই হাইকোর্টে পরবর্তী শুনানি হবে। এমনই আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই। এই আবেদনের স্বপক্ষে সিবিআই-এর পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, ‘এটা একটা সিরিয়াস ইস্যু। আমাদের শীর্ষ আদালতকে সম্মান জানাতে হবে। না হলে স্পিরিট নষ্ট হবে।
অন্য দিকে, সিবিআই-এর আবেদন প্রসঙ্গে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। খুব শর্ট নোটিশে এটা করেছে সিবিআই। হাইকোর্ট একটা সিম্পল হাউস অ্যারেস্টের রায় দিয়েছে। পাঁচ বিচারপতিকে অনুরোধ করা হয়েছে। তারপর কেন এই আর্জি করা হচ্ছে? মামলার আর্জেন্সি থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এটা হতে পারে?’ আর এক আইনজীবী কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মধ্যরাতে সিবিআই আবেদন ফাইল করেছে। সকালে জানাচ্ছে আমাদের৷ আমাদের জামিন মামলা শোনাই হয়নি। আমরা আগের দিন দুটোয় শোনার আর্জি করেছিলাম। লার্জার বেঞ্চ করে দেওয়া হয়। আমি জানি না একে কি পিটিশন বলব। অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনাই হচ্ছে না।’
দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি আইপি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা আজ মামলা শুনতে পারি। সে ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টে পেন্ডিং বলে কী অসুবিধে আছে?’ বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, ‘সামনে সাইক্লোন ফলে এই মামলার শুনানি আজ মুলতুবি হয়ে গেলে আরও বিলম্ব হবে।’
অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দিন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে প্রথম থেকেই সরব সিবিআই। আজ সিবিআই-এর পক্ষের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘১৭ মে সিবিআই এদের গ্রেফতার করে। সেদিন মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই অফিসে যান। প্রচুর লোক ছিল তাঁর সঙ্গে। দু’জন মন্ত্রী ছিলেন। একহাজার লোক ছিল। এই পরিস্থিতিতে সিবিয়াই আদালতে আসে। মামলার উল্লেখ করে। ভার্চুয়াল হিয়ারিং-এর কথা বলে, কারণ অভিযুক্তদের কোর্টে তোলা সম্ভব ছিলনা। এই প্রসঙ্গে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছিলেন অভিযুক্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। কোনও মন্ত্রী এজলাসে ছিলেন না বিক্ষোভ করতে।’
Be the first to comment