নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ও রাজ্য সরকারের হলফনামার প্রত্যুত্তরে কলকাতা হাইকোর্টে পাল্টা হলফনামা জমা দিল সিবিআই। কিন্তু সিবিআইয়ের হলফনামায় অতিরিক্ত কিছু অভিযোগ করা হয়েছে বলে দাবি রাজ্য সরকারের। রাজ্য তার উত্তর দিতে চায় বলে জানিয়ে আদালতের কাছে সময় চাইলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত।
বৃহস্পতিবার নারদ মামলার শুনানিতে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে গিয়েছিলাম একজন বরিষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে। ১৯ মে এই মামলায় রায়দানের সময় যখন দুই বিচারপতি ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন, তখন নিয়ম অনুযায়ী এই মামলা তৃতীয় কোনও বিচারপতির কাছে পাঠানোর কথা। পাশাপাশি যাঁরা ডিভিশন বেঞ্চে থাকেন, সেই বিচারপতিদের কেউ তৃতীয় বেঞ্চে থাকতে পারেন না। একইসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, মামলাকারী সিবিআই বলেই কি যে কোনও মামলায় প্রধান বিচারপতি হস্তক্ষেপ করতে পারেন ?”
তখন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আপনারা কী সওয়াল করতে চান তার একটা রূপরেখা আদালতকে জানান। আজকেই সবকিছু জানানোর দরকার নেই।” আগামী ১৬ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি । ওইদিন রাজ্যের তরফে সিবিআইয়ের বক্তব্যের পাল্টা বক্তব্য পেশ করবেন রাজ্য সরকার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মলয় ঘটক-এর তরফে আইনজীবীরা।
উল্লেখ্য, ৩০ জুন নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের হলফনামা গ্রহণ করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। হলফনামার সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সাত দিনের মধ্যে রাজ্য লিগাল সার্ভিস অথরিটির কাছে ওই টাকা জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আজ মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ইতিমধ্যেই ওই টাকা জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
এ রাজ্য থেকে নারদ মামলা সরানোর যে আবেদন সিবিআই করেছে, তার শুনানি চলছে বিগত প্রায় দেড় মাস ধরে । নারদ মামলায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করে মামলায় সিবিআই যুক্ত করেছিল রাজ্য সরকার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে ৷ কিন্তু মামলার শুনানিতে এই তিন পক্ষ হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে চাইলেও দেরি হওয়ার কারণে আদালত তা গ্রহণ করেনি।
হাইকোর্টের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মলয় ঘটকরা। ২৫ জুন সুপ্রিমকোর্ট হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে আলাদা করে আবেদন জানানোর নির্দেশ দেয় এই তিন পক্ষকে। সেই বিষয়টি শুনানির পর ৩০ জুন কলকাতা হাইকোর্টের ৫ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ এই তিন পক্ষের হলফনামা গ্রহণ করে।পাশাপাশি সিবিআইকে-এর পাল্টা বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত কিন্তু আজ রাজ্যের তরফে জানানো হয় সিবিআই অনেক কিছুই অতিরিক্ত তাদের হলফনামায় জানিয়েছে। সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে তাদের বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হোক। আদালত এই আর্জি মঞ্জুর করেছে। আগামী ১৬ অগস্ট ফের শুনানি হবে এই মামলার ।
Be the first to comment