প্লেন তখন মাঝ আকাশে। আচমকাই পাইলট খেয়াল করলেন বিমানে জ্বালানির পরিমাণ অত্যন্ত কমে গিয়েছে। কাজ করছে না বেশিরভাগ স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি। যত দ্রুত সম্ভব জরুরি অবতরণ করা দরকার। কিন্তু আবহাওয়া এতটাই খারাপ যে রানওয়েটাও ভালোমতো ঠাহর করতে পারছিলেন না পাইলট। এদিকে যাত্রী এবং কর্মী মিলিয়ে প্লেনে রয়েছেন কমপক্ষে ৩৭০ জন।
কিন্তু পরিস্থিতি যতই জটিল হোক না কেন নিজের দক্ষতায় একদম নিরাপদে বিমানে জরুরি অবতরণ করিয়েছেন পাইলট।এই ঘটনা ঘটেছে ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে। সম্পূর্ণ নিজের দক্ষতা এবং বুদ্ধিতে জেএফকে–র পাশে তুলনামূলক ছোট বিমানবন্দর নেওয়ার্কে নিরাপদে বিমানটির অবতরণ করান পাইলট। এই জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই–১০১ বিমানটি।
দিল্লি থেকে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছিল ওই বিমানটি। নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে নামার সময় পাইলট বুঝতে পারেন আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ। এতটাই খারাপ যে ৪০০ ফুট নীচের রানওয়েটাও ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছিল না। এ দিকে প্রায় ১৫ ঘণ্টা উড়েছে প্লেন। ফলে জ্বালানির পরিমাণও কমে গিয়েছে। এ ছাড়াও খারাপ হয়ে গিয়েছে বিমানের তিনটি ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেমও (আইএলএস)। এই আইএলএসের সাহায্যেই যেকোনো রকমের আবহাওয়ায় সঠিকভাবে নিরাপদে বিমান অবতরণ সম্ভব হয়। তবে এখানেই শেষ নয়। ঠিকভাবে কাজ করছিল না বিমানের অটো ল্যান্ডিং সিস্টেম, উইন্ডশিয়ার সিস্টেম, অটো স্পিট ব্রেক এবং অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিটও।
গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে জেএফকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানান এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলট। জেএফকে ছাড়া অত বড় বোয়িং বিমান অবতরণের নিরাপদ বিমানবন্দর ছিল অ্যালব্যানি, বস্টন বা কানেটিকাটের ব্র্যাডলি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কিন্তু জ্বালানি কম থাকায় অত দূর উড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাননি পাইলট। সেজন্য প্রায় ৩৮ মিনিট নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরের উপরেই চক্কর কাটে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমান। কিন্তু তারপরেও ঠিক হয়নি আবহাওয়া। এরপর সম্পূর্ণ নিজের দক্ষতা এবং বুদ্ধিতে নিরাপদে বিমানটির অবতরণ করান পাইলট।
৩৭০ জনের প্রাণ বাঁচানোর জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে ওই পাইলটের প্রশংসা করা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এবং কেন এই ঘটনা ঘটল তা জানার জন্য তদন্ত শুরু করেছে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
Be the first to comment