নিমতিতা বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল এনআইএ। চার্জশিটে ইউএপিএ ধারার কথা উল্লেখ করেছে এনআইএ। বিস্ফোরণের সময় মারাত্মক আইডি ব্যবহার করা হয়েছিল, ফরেনসিক রিপোর্টে এমন তথ্য প্রমাণের হাতে এসেছে। সেই কারণেই এই সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি নিমতিতা স্টেশনে বিস্ফোরণ হয়। তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে তদন্তভার নেয় এনআইএ। ওই বিস্ফোরণে ২৭ জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে বিধায়ক জাকির হোসেন ছিলেন। আরও ২২জন গুরুতর আহত হন। ঘটনায় শহিদুল ইসলাম নামে এক জনকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি এবং বেশ কিছু বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। আরও দু’জনের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। শুরু হয় রেল-রাজ্য তরজা।
রাজ্যের তরফে স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। স্টেশনে আলো না থাকার কথাও বলা হয়। রেল তদন্তকারীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ঘটনার সময়ে স্টেশন অন্ধকার ছিল না। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের বিস্ফোরণেই আলো নেভে। সিসিটিভি কিংবা আরপিএফ নজরদারিও ছিল পর্যাপ্ত।
ঘটনাস্থলের পাশে রেল লাইন থেকে লোহার কনটেনারের টুকরো, ক্যাপাসিটার, বাইকের ব্যাটারির অংশ উদ্ধার করে সিআইডি। মূলত এগুলি আইইডি বিস্ফোরণেই ব্যবহার করা হয় বলে সিআইডি দাবি করে। তা হলে কী বড় কোনও পরিকল্পনাতেই এই হামলা, প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সিআইডি এখনও পর্যন্ত তদন্তে কী কী পেয়েছে জানতে চেয়ে সিআইডি তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে মঙ্গলবার দীর্ঘ বৈঠক করে। তদন্তে নেমে এনআইএ-এর গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে মনে করেন, ভয়াবহ বিস্ফোরণে রাজ্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে মেরে ফেলাই পরিকল্পনা ছিল আততায়ীদের। ফলে সিআইডির দেওয়া খুনের চেষ্টার মামলা এবং বিস্ফোরক মামলার সঙ্গে এবার ইউএপিএ ধারা যোগ করে এনআইএ। রেল পুলিশের বেশ কয়েকজন আধিকারিক এবং রাজ্যের সিআইডি’র বেশ কয়েকজন আধিকারিককে এই বিস্ফোরণের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নিমতিতা স্টেশনের পাশে যে সমস্ত দোকানদাররা রয়েছেন তাঁদের কাছে বিস্ফোরণের ভয়াবহতা নিয়ে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বিস্ফোরণস্থল থেকে মোটরবাইক, মোবাইল উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সেই মোবাইলটির ভাঙা অংশ উদ্ধার করে সিআইডি। সুতির একটি আম বাগানের ভিতরে ঘটনার পর মোবাইলটিকে ভেঙে একটি আম গাছের ভিতর সেটা ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্তের পর সেই মামলার চার্জশিট জমা দিল এনআইএ।
এ প্রসঙ্গে জাকির হোসেন বলেন, “এনআইএ তদন্ত করছে। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক। এলাকার মানুষ এখনও আতঙ্কিত রয়েছেন। এর যদি তদন্ত না হয়, তাহলে আইন-শৃঙ্খলা আরও খারাপ হবে।”
Be the first to comment