চিরন্তন ব্যানার্জি:-
সোমবার সকালেই একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। তাতে দেখা যায়, একটি জায়গায় একসঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেকে, রয়েছেন পুলিশও। বলা হয়, ওই জায়গা আদতে আরজি কর হাসপাতালের চতুর্থ তলার সেমিনার রুম। যেখানে উদ্ধার হয়েছিল কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসকের দেহ। ওই সেমিনার রুমে একসঙ্গে এত মানুষ কী করছিলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে সকাল থেকে। প্রশ্ন ছিল, যে জায়গায় দেহ উদ্ধার, সেখানে একসঙ্গে এত মানুষ কী করে প্রবেশ করতে পারলেন? পুলিশ বাধা দিল না কেন?
তবে সোমবার বিকেলে ঘটনা প্রসঙ্গে বিশদ তথ্য দিল লালবাজার। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখার্জি স্পষ্ট জানান, আরজি কর হাসপাতালের চতুর্থ তলার সেমিনার হল, অর্থাৎ যেখানে ওই তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, ওই সেমিনার রুমটি আয়তনে ৫১ বাই ৩২ ফুট। দেহ ছিল ওই সেমিনার রুমের একদিকে। সেই কারণেই ৫১ বাই ৩২ ফুটের সেমিনার রুমের ৪০ ফুট পর্যন্ত কর্ডন করা হয়েছিল।
সঙ্গেই জানান, যে ভিডিওটি গত কয়েকঘন্তায় ভাইরাল রয়েছে, সেটি সেমিনার রুমের, কিন্তু ওই ৪০ ফুটের বাইরের ১১ ফুটের জায়গার। ওই ১১ ফুটের মধ্যে সেই সময় হাজির হয়েছিলেন পরিবারের সদস্য, অন্যান্য চিকিৎসকেরা এবং হাসপাতালের কর্মীবৃন্দ। ওখানে দাঁড়িয়েই চিকিৎসকেরা নিজেদের দাবি দাওয়া জানিয়েছিলেন বলে জানান ইন্দিরা মুখার্জি। সঙ্গেই তিনি সাফ জানান, কর্ডন করা জায়গায় কোনও বহিরাগত প্রবেশ সম্ভব নয়। ওই অংশে কেবলমাত্র তদন্তকারী আধিকারিক, ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা, দেহ স্থানান্তকরনের কাজ করেছেন যাঁরা এবং ফটোগ্রাফি-ভিডিওগ্রাফির দায়িত্বে থাকা কর্মীরা।
অন্যদিকে, ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপি নেতা অমিত মালবীয় এক্স হ্যান্ডলে দাবি করেছেন, ওই সময় চিকিৎসক, পুলিশ এবং হাসপাতাল কর্মীদের পাশাপাশি ‘বহিরাগতেরা’ও ছিলেন ঘটনাস্থলে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে সিবিআইয়ের আইনজীবী কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেছিলেন, আরজি করে ঘটনাস্থলের ‘চরিত্র বদলে’ ফেলা হয়েছে। সে কথাও টেনে এনেছিলেন অমিত। লিখেছিলেন, ‘‘এখন আমরা বুঝতে পারছি, এখন উনিও কথা বলেছিলেন!’’ এর প্রেক্ষিতে ইন্দিরা জানান, ভিডিয়োটি যখন করা হয়েছে, তখন ঘটনাস্থলে পুলিশ, হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীরা, পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। মহিলা চিকিৎসককে হাসপাতালের যিনি মৃত ঘোষণা করেছিলেন, তিনিও সেই সময় ওই ঘরে ছিলেন। পিজিটির কিছু পড়ুয়া ছিলেন। তাঁদের কিছু দাবিদাওয়া ছিল। ওখানে বসেই সেই সব দাবিদাওয়া লিখছিলেন তাঁরা। বহিরাগত কেউ ছিলেন না। যে জায়গাটা ঘিরে রাখা ছিল, সেখানে বহিরাগতের প্রবেশ সম্ভব ছিল না।’’
দেহ উদ্ধারের পর সন্দীপের আইনজীবী শান্তনু ঘটনাস্থলে কী করছিলেন, তা নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছিলেন। ইন্দিরা সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আইনজীবী ছিলেন বলে দাবি করছেন কেউ কেউ। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। তবে যে-ই আইনজীবী থাকুক না কেন, উনি হাসপাতালের অনুমতিতেই ছিলেন।’’
Be the first to comment