রোজদিন ডেস্ক :-
ফের রাজ্য সরকারকে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সোমবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ধর্মঘট ডাকার হুঁশিয়ারি দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এদিন সন্ধেয় ধর্মতলার অনশনমঞ্চ থেকে একথা জানান আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা।
১০ দফা দাবি নিয়ে ‘আমরণ অনশনে’ বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আরজি কর-কাণ্ডের বিচার, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিবর্তনের দাবিতে গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে তাঁদের আন্দোলন চলছে। কিন্তু সরকারের তরফে সাড়া মিলছে না। ইতিমধ্যে ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন পাঁচ জন। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনের পরবর্তী অভিমুখ কী হওয়া উচিত, তা স্থির করতে শুক্রবার সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। বৈঠক শেষে দেবাশিস বলেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত আমরা একটা সময়সীমা দিচ্ছি। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের সব ক’টা দাবি মানার জন্য আলোচনায় বসতে হবে এবং সব কয়েকটি দাবি মেনে নিতে হবে। যদি তা নয় তবে আগামী মঙ্গলবার সমস্ত সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সর্বাধিক ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।’’ দেবাশিস এ-ও জানান, সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অতীতে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে স্বাস্থ্য পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে নানা অভিযোগ উঠেছিল। শুধু কলকাতায় নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে প্রভাব পড়েছিল ডাক্তারদের কর্মবিরতি। শুক্রবার সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে হুঁশিয়ারির সুরে দেবাশিস বলেন, ‘‘ধর্মঘট চলাকালীন যদি এক জন রোগীরও কোনও সমস্যা হয়, তবে তার দায় রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে। আমাদের আর কোনও উপায় ছিল না বলেই অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছিলাম আমরা। কর্মবিরতি তুলে নিজেদের জীবন বাজি রেখেছিলাম। ভেবেছিলাম মানবিক মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কথা ভাববেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সদুত্তর পাইনি সরকারের থেকে। আমাদের সহযোদ্ধাদের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে।’’
বস্তুত, শুক্রবার বিকেলে অনশন মঞ্চ থেকে অনশনরত সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, সিগ্ধা হাজরারা প্রশ্ন তোলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুজোয় মেতে আছেন। অথচ গত ১৩ দিন ধরে আমরা শুধু জল খেয়ে আছি। অথচ আমাদের দেখতে উনি এক বারের জন্যেও এলেন না!” তাঁরা এই প্রশ্নও তোলেন, কোথায় গেল ওঁর মাতৃসত্তা?”
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন সেমিনার হল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তরুণী চিকিৎসককে। এই ঘটনার পর থেকে সুবিচার, নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলনে শামিল জুনিয়র চিকিৎসকরা। আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ৮ জন জুনিয়র চিকিৎসক। তাঁদের সর্বাঙ্গীণ ধর্মঘটের মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত বহু রোগী বিপাকে পড়তে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
Be the first to comment