২১ জুলাই কানায় কানায় ভরে যাবে ধর্মতলা চত্বর। রাজপথ পরিণত হবে জনপথে। শক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমটাই জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন বিকেলে তৃণমূল ভবনে আয়োজিত ২১ জুলাই সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। যুব তৃণমূল নেতৃত্ব-সহ খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শহীদ তর্পণ দিবসের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কোভিডের কারণে গত দু’বছর ধরে জনসভা করতে পাড়া যায়নি। কিন্তু এই বছর ফের আগের মতো শহীদ তর্পণ ও জনসভা করা হবে। এবারের সভায় অন্যান্য রাজ্য থেকেও তৃণমূল প্রতিনিধিরা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন। ঐতিহাসিক জনসমাগম এবারের ২১ জুলাইয়ে।
পার্থবাবু আরও বলেন, সারা দেশ তাকিয়ে আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। আজকের পর থেকে বুথ স্তরে প্রচার চলবে ধর্মতলা চলো। ওই মঞ্চ থেকে দলনেত্রী কী বার্তা দেন তার দিকেই চেয়ে আছে আপামর কর্মী সমর্থকেরা।
প্রতিবছর শহিদ স্মরণে ধর্মতলায় এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়। সেই জনসভার প্রধান বক্তা হিসেবে থাকেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবারই মমতা ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দলীয় নেতা নেত্রী থেকে কর্মীদের আগামী দিনের পথদিশা বাতলে দেন। সেই মতোই দল চলে। এমনকী প্রতিবারই এই জনসভায় অনেক নতুন মুখ দেখা যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, এ বছরও সেইরকম চমক থাকবে।
কোভিডের জন্য পরপর দু’বছর একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ ধর্মতলায় করতে পারেনি তৃণমূল। তবে এবছর চেনা জায়গায় হবে শহিদ দিবসের ক্যালেন্ডার কর্মসূচি। শুক্রবার এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক পোস্টার প্রকাশ করল তৃণমূল। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ লেখা সেই চেনা স্লোগান ‘ধর্মতলা চলো।’
২০২০-এর মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে লকডাউন শুরু হয়েছিল দেশে। গত বছর বিধানসভা ভোটের পরে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ তীব্র আকার নিয়েছিল বাংলায়। পরপর দু’বছর এই সমাবেশ ভার্চুয়াল করতে হয়েছিল তৃণমূলকে। কালীঘাট মিলন সমিতির মাঠে ছোট্ট প্যান্ডেল করে সেখানে বক্তৃতা করেছিলেন দিদি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীরা। তবে এবার চেনা জায়গায় ফিরছে সমাবেশ।
বিশেষত এই সভার আগেই রয়েছে রাষ্ট্রপতি ভোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যে নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে বিরোধী দলগুলিকে এককাট্টা করতে মাঠে নেমেছেন স্বয়ং দলনেত্রী। দিল্লিতে ইতিমধ্যেই ১৭টি দলকে এক টেবিলে বসাতে সফল হয়েছেন তিনি। এই বৈঠককে কেন্দ্র করে রাজধানীর রাজনীতিতে নতুন করে বিরোধীরা জোয়ার তুলেছে। ১৭টি অ-বিজেপি দলই অভিন্ন প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে সহমতে পৌঁছেছে। একাজে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সাফল্য এলে, মমতাই বিজয়িনী হিসেবে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি-বিরোধী মুখ হিসেবে উঠে আসবেন। ফলে রাষ্ট্রপতি ভোটে মমতা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তারও সার্থক রূপ ধরা পড়তে চলেছে এবারের ২১ জুলাইয়ের সভায়। সেদিক থেকে এবারের সভার গুরুত্ব অনেক বেশি।
Be the first to comment