ইসকন সন্ন্যাসী গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা ভারতের,উদ্বেগ ব্যক্ত করলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক :- চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার এবং পরবর্তীতে জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় ভারত উদ্বেগও প্রকাশ করে। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকাণ্ডে ভারতেও ক্ষোভ বাড়ছে। কলকাতায় বাংলাদেশকাণ্ডের বিরুদ্ধে বঙ্গ বিজেপি এবং প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মিছিলও বের করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের দাবি ছিল, হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
সেই আঁচ এসে পৌঁছেছে সীমান্তের এপারের সংসদ ভবনেও। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন কংগ্রেসের নবনির্বাচিত হবু সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।
বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি এবং সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর লাগাতার যে হিংসার খবর উঠে আসছে, তা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রিয়ঙ্কা। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার লোকসভায় সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা তাঁর। আর তার আগেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন প্রিয়ঙ্কা। এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে লাগাতর ঘটে চলা হিংসার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কেন্দ্রীয় সরকারকে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছি। সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে দাবি জোরাল করতে হবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে’।
বাংলাদেশের ঘটনার নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তাঁর মতে, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার মাধ্যমে বোঝা যায়, সেই দেশের অন্তর্বর্তী সরকার কারা চালাচ্ছে। সেখানে যেভাবে হামলা চালানো হচ্ছে তা মানবতাবিরোধী। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ করা উচিত।
এদিকে কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ বলেন, তাঁর দল বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, ‘বাংলাদেশে যা ঘটছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কয়েকদিন আগে একজন ইসকন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়। সমর্থকদের উপরও হামলা করা হয়। আমি জানতে চাই ‘বিশ্বগুরু’ (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) কোথায়? কোথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি? রাশিয়া ও ইউক্রেন এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতিবেশী এলাকায় ভারতের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ব্যাপারে নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের দৃঢ় অবস্থান নেওয়া উচিত কিন্তু আমরা তা দেখতে পাচ্ছি না।”
এক বিবৃতিতে কংগ্রেসের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিসিটি বিভাগের চেয়ারম্যান পবন খেরা উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানাবে বলে প্রত্যাশা করছে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। পবন খেরা বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে কংগ্রেস। ইসকন নেতা ও সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের ঘটনা এ নিরাপত্তাহীনতার সর্বশেষ উদাহরণ।
বাংলাদেশে  ইসকন-এর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন অন্ধ্র্রপ্রদেশের উপ মুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণ। তিনি বলেন, ওখানে যা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক। তিনি এও বলেন, প্যালেস্তাইনে কিছু ঘটলে অনেক প্রতিক্রিয়া আসে। কিন্তু বাংলাদেশে যখন এটা হয় তখন কেউ সাড়া দেয় না।
অন্যদিকে, কলকাতার ইসকন সংগঠনের সহ সভাপতি রাধারমন দাসের স্পষ্ট বক্তব্য, ”বিক্ষোভ থামাতেই তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুধু চিন্ময় প্রভুই নন, বাংলাদেশে আরও বেশ কয়েকজন হিন্দু সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। এটা কোনওমতেই মেনে নেওয়া যায় না।” এ বিষয়ে তিনি রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বুধবার কলকাতায় মোমবাতি মিছিল করে কংগ্রেস। মিছিলে যোগ দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের অফিস পর্যন্ত এই মিছিল যায়। মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ জানান প্রদেশ কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। এই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, ‘প্রতিটা দেশের সরকারের উচিত, সেই দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। বাংলাদেশ সরকার সেটা পারছে না। তাই এই মিছিল।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*