পুলিশি হানার জেরে করুণাময়ী থেকে নিখোঁজ হয়েছেন তিন আন্দোলনকারী। তেমনই অভিযোগ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের। তিন জন নিখোঁজ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, গত রাতে আচমকাই পুলিশ এই অভিযান চালায়। দিশেহারা হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। অচিন্ত্য ধারা, অচিন্ত্য সামন্ত, অর্ণব ঘোষ নামে তিন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। এক মহিলা টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী বলেন, “অচিন্ত্য ধারা, অচিন্ত্য সামন্ত, অর্ণব ঘোষ, এই তিন জনের কোনও ট্রেস আমরা পাচ্ছি না। এই তিন জনের গায়ে যদি একটাও আঁচড় লাগে, কলকাতার রাজপথে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এখানে চাকরিপ্রার্থীদের লাশ দেখবেন।”
মধ্যরাতে ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট প্রার্থীদের ওপর হঠাৎ করেই অভিযান চালায় পুলিশ। করুক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় করুণাময়ীতে। রীতিমতো বলপ্রয়োগ করে সরিয়ে দেওয়া হয় চাকরিপ্রার্থীদের। মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষ টেনে হিঁচড়ে, চ্যাঙদোলা করে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দাঁত চেপে লড়ে যাওয়া ৮৪ ঘণ্টার লড়াই শেষমেশ আচমকাই শেষ হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন আন্দোলনকারীরা। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অসুস্থ ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের। চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওত রাতে কোথায় যাবেন তাঁরা? কান্নায় ভেঙে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা।
ভোর সাড়ে চারটে, নিউটাউন থানা থেকে শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত একটি গাড়ি দেয় পুলিশ। ১৮ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে যাওয়া হয় সেই গাড়িতে। ভোর পৌনে পাঁচটা। চাকরিপ্রার্থীদের একটি গাড়ি করে শিয়ালদহ স্টেশনে পাঠানো হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, “অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁদেরকেও ধাক্কাধাক্কি করছেন।” এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “আমাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলুন, এমনটা করবেন না।” তর্জন-গর্জনও সার হয়েছে আন্দোলনকারীদের। মারমুখী পুলিশের সামনে কার্যত অসহায় হয়ে গেল চার দিন ঠায় বসে থাকা মানুষগুলো।
Be the first to comment