২৮ হাজার পুজোকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেবে রাজ্য সরকার

Spread the love

দেবীপক্ষ শুরু হতে একমাসও আর বাকি নেই। ভাদ্রের চড়া রোদের মাঝেও বিকেলের দিকে কখনও কখনও শরতের আকাশ উঁকি দিতে শুরু করেছে। দিদি তাই আর অপেক্ষা করলেন না। আগামী সপ্তাহে তাঁর বিদেশ সফরে যাওয়ার কথা। তার আগেই পুজো কমিটি গুলিকে একটা সতর্কবার্তা শুনিয়ে উপহার ঘোষণা করে দিলেন।

কী সেই সতর্কবার্তা? উপহারের বহরই বা কত?

সোমবার বিকেলে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলিকে ডেকে বন্দোবস্ত বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো কমিটিগুলিকে সেখানেই সতর্ক করে তিনি বলেন, “টাকার প্রলোভনে পা দেবেন না। অনেকে কিন্তু আপনাদের পুজো কমিটি কিনে নিতে চাইবে। তাতে রাজি হবেন না। মনে রাখবেন আত্মসম্মান সবার আগে।” এর পরই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, “জেলা ও শহর মিলিয়ে মোট ২৮ হাজার পুজো হয় বাংলায়। শহরে ৩ হাজার গ্রামে ২৫ হাজার। এদের সবাইকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে।”

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শহরের পুজো কমিটিগুলিকে শহরের পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেবে কলকাতা পুরসভা এবং দমকল বিভাগ। জেলার পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়া হবে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর, পর্যটন বিভাগ, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং কলকাতা পুলিশের উদ্যোগে।
তবে এখানেও শেষ নয়। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ বার পুজোয় বিদ্যুতের ব্যবহারেও ভালরকম ছাড় দেবে সরকার। একে তো লাইসেন্স ফি দিতে হবে না। উপরি মোট বিলের উপর ছাড় ১৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এ বার ২৩ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মিলবে।

এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই বাংলায় দুর্গাপুজোর সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। বহু মানুষ বছরের এই কটা দিনের দিকেই তাকিয়ে থাকেন কটা টাকা উপার্জনের জন্য। তবু প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের কোষাগারে যখন তীব্র সংকট সে সময় খেলা-মেলা-পুজোর জন্য এত কোটি টাকা খরচের কি কোনও অর্থ রয়েছে? হিসাব কষলে দেখা যাবে শুধু পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান বাবদ খরচ হবে ২৮ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে আনুসঙ্গিক ছাড় ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি মিলিয়ে আরও বেশ কয়েক কোটি টাকার ধাক্কা।

মুখ্যমন্ত্রীর এ ঘোষণা নিয়ে কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দল অবশ্য কোনও মন্তব্য করেনি। সংখ্যাগুরুর ভাবাবেগে পাছে আঘাত লাগে, হয়তো সে কথা ভেবে। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, পুজো কমিটিগুলিকে কিনে নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে মমতা যে মন্তব্য করেছেন তার সঙ্গে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি-র দিকেই ইশারা করেছেন। কিন্তু সরকার যে ভাবে পুজো কমিটি গুলিকে উপহার দেওয়ার কথা ঘোষণা করল তাও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের উর্ধ্বে নয়।

পুজো কমিটিগুলির প্রতিনিধিরা ছাড়াও এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১৯ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে। ২৩ অক্টোবর রেড রোডে বিকেল চারটেয় হবে পুজো কার্নিভাল। গত বছর কার্নিভালে ৫৫টি পুজো অংশ নিয়েছিল। এ বার তা বেড়ে হবে ৭৫।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*