তিনি ‘দ্য স্ট্র্ং ম্যান’। চেচেন যুদ্ধের নায়ক। খালি গায়ে বন্দুক হাতে ভালুক শিকার করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তিনি পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই পুতিনই নাকি এবার ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে অস্ত্রোপচার করাতে বাধ্য হচ্ছেন। এবং চিকিৎসার জন্য দ্রুত লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাবেন তিনি। এমনটাই দাবি করা হয়েছে মেসেজ অ্যাপ টেলিগ্রামে। আর তা নিয়েই এখন তুঙ্গে জল্পনা।
গত মার্চ মাসে পাঁচ দেশের গোয়েন্দা জোট ‘ফাইভ আইজ’ পুতিন ক্যানসার আক্রান্ত বলে দাবি করে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়াচ্ছে এই আশঙ্কাকে ঘিরে। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ব্রিটেন ও আমেরিকা- এই পাঁচটি দেশের গোয়েন্দাদের জোট ‘ফাইভ আইজ’। সেই জোটের দাবি, পুতিনের সাম্প্রতিক ফুটেজ থেকে মনে হচ্ছে, তাঁর শরীরে একটা ফোলা ভাব রয়েছে। এমনকী, কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ তাঁকে করতে দেখা যাচ্ছে। এমনকী, গত পাঁচ বছরের তুলনায় তাঁর সিদ্ধান্তেও বদল দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কিছুটা অসংলগ্ন রুশ প্রেসিডেন্টের আচরণ। দাবি, ক্যানসার জাতীয় কোনও গুরুতর অসুখে ভুগছেন পুতিন। ভুগছেন ডিমেনশিয়া অর্থাৎ স্মৃতিভ্রংশের অসুখে। আর সেই কারণেই তাঁকে নানা ধরনের স্টেরয়েড নিতে হচ্ছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেই নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এমনকী, এই অসুস্থতার কারণেই শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুতিন, এমনও দাবি ওই গোয়েন্দা সংস্থার।
এহেন পরিস্থিতিতে টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এক চাঞ্চল্যকর খবর। দাবি করা হয়েছে, অস্ত্রোপচারের জন্য দ্রুত লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাবেন ক্যানসার আক্রান্ত পুতিন। তাঁর অনুপস্থিতিতে দেশের রাশ থাকবে রুশ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিকোলাই পেত্রোশেভের হাতে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, কেন পেত্রোশেভের হাতে সাময়িকভাবে ক্ষমতা ছাড়ছেন পুতিন? উত্তর, ইউক্রেন অভিযানের আসল কারিগর এই পেত্রোশেভ। তিনিই পুতিনকে বিশ্বাস করিয়েছেন যে কিয়েভ নব্য-নাৎসিদের গড় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া, সোভিয়েত আমলে কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা কেজিবির প্রধান ছিলেন তিনি। তারপর রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি’র প্রধান পদেও বসেন তিনি। সবমিলিয়ে, পেত্রোশেভ পুতিনের ডান হাত বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। এবং বিশ্বের সামনে শারীরিক দুর্বলতার কথা প্রকাশ করতে চাইছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া। প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়লেও কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয়েছে তাঁর বাহিনী। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বে পালটা আঘাত হেনেই চলেছে ইউক্রেনের বাহিনী। এহেন পরিস্থিতিতে পুতিন যে চাপের মুখে রয়েছেন তা স্পষ্ট। যুদ্ধের উত্তেজনা, আমেরিকা ও ন্যাটোর সঙ্গে সংঘাতের আশঙ্কা এবং নিজের বাহিনীর ‘বিফলতা’র ফলে মানসিক ধাক্কা খেয়েছেন পুতিন। এবং ঘটনাবলীর প্রভাব যে তাঁর শরীরেও পড়ছে সেই বিষয়ে একমত হয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি সিডনির এক কসমেটিক সার্জন ইনস্টাগ্রামে পুতিনের ভিন্ন বয়সের দু’টি ছবি পোস্ট করেছেন। তাঁর দাবি, যৌবন ধরে রাখতে মুখে বোটক্স প্রয়োগ করছেন পুতিন। এবং এর ফলে তাঁকে দেখতে অনেকটা ‘বুড়ো বিড়ালের’ মতো লাগছে।
Be the first to comment