ইতিহাসে প্রথম; সংসদে বহিরাগতদের এনে সাংসদের মারধর, অভিযোগ রাহুল গান্ধীর

Spread the love

বাদল অধিবেশনের সমাপ্তি নিয়ে অব্যাহত দোষারোপের পালা। আচমকা অধিবেশন শেষ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে মিছিল করেন বিরোধীরা। মিছিল শেষে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, দেশের ৬০ শতাংশ মানুষের কণ্ঠস্বর দমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে দাবি করেন, বহিরাগতদের নিয়ে এসে সাংসদের মারধর করা হয়েছে।

মিছিল শেষে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আপনাদের (সংবাদমাধ্যম) সঙ্গে কথা বলার জন্য আজ আমাদের এখানে আসতে হয়েছে। কারণ আমাদের সংসদে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এটা গণতন্ত্রের হত্যা। সংসদের অধিবেশন শেষ হয়ে গিয়েছে। দেশের ৬০ শতাংশ বিষয় নিয়ে কোনও অধিবেশন হয়নি। দেশের ৬০ শতাংশের মানুষের কণ্ঠস্বর দমিয়ে দেওয়া হয়েছে। চেপে দেওয়া হয়েছে।’

তুমুল বিরোধিতার মধ্যে বুধবার বাদল অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সেই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল রাজ্যসভা। মার্শালদের বিরুদ্ধে মহিলা সাংসদের নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। সেইসব ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে সংসদ ভবন থেকে বিজয়চক পর্যন্ত মিছিল করেন বিরোধীরা। তাতে ছিলেন ওয়াইনাডের কংগ্রেস সাংসদও।

প্রসঙ্গত, লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়ার মধ্যেই বুধবার রাজ্যসভায় সাধারণ বিমা সংস্থার ব্যবসা (জাতীয়করণ) সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেজন্য রাজ্যসভার অধিবেশন বাড়ানোর আর্জি জানায় সরকার। যদিও বিরোধীরা দাবি করতেন থাকেন, বৃহস্পতিবারও বিলটি পেশ করা যেতে পারে। বিরোধীদের সেই আপত্তি গ্রাহ্য করা হয়নি। তা নিয়ে তুমুল হট্টগোল শুরু হয়।

‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের স্বার্থে নরেন্দ্র মোদী সরকার সেই বিল এনেছে বলে দাবি করতে থাকেন বিরোধীরা। সরকার-বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা ওয়েলে নেমে পড়েন। ‘চেয়ার’-এর দিকে যাওয়ার আগেই তাঁদের আটকানো হয়। প্রায় ৫০ জন মহিলা ও পুরুষ নিরাপত্তারক্ষী মিলে কার্যত ‘চেয়ার’-কে ঘিরে রাখেন। বিরোধীদের থামাতে মহিলা সাংসদরা যেখানে বিরোধিতা করছিলেন, সেখানে পুরুষ নিরাপত্তারক্ষী এবং যেখানে পুরুষ সাংসদরা ছিলেন, সেখানে মহিলা নিরাপত্তারক্ষীদের মোতায়েন করা হয়।

কংগ্রেসের সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘আজ রাজ্যসভায় যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমাদের সদস্যের থেকে মার্শালের সংখ্যা বেশি ছিল। মার্শালরা আমাদের মহিলা সদস্যদের হেনস্থা করেছেন। সংসদের ভিতরেও মহিলারা সুরক্ষিত নন।’ মার্শালদের সংখ্যা বেশি হওয়ার দাবি তুলে ওয়াক-আউট করেন বিরোধীদরা। এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার বলেন, ‘আমার ৫৫ বছরের সংসদীয় জীবনে কোনওদিন মহিলা সাংসদদের উপর এভাবে আক্রমণ নেমে আসতে দেখিনি। বাইরে থেকে রাজ্যসভায় ৪০ জনের বেশি পুরুষ এবং মহিলাকে আনা হয়েছিল। এটা বেদনাদায়ক। এটা গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ।’

একইসুরে বৃহস্পতিবার রাহুল বলেন, ‘এই প্রথম সংসদের মধ্যে হামলার মুখে পড়লেন সাংসদরা। বহিরাগতদের আনা হয়েছিল। যাঁরা সংসদদের মারধর করেছেন। সাংসদদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*