দেশ চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদীরা। ওদের সরিয়ে প্রকৃত হিন্দুদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাজস্থানের মেগা জনসভা থেকে চব্বিশের নির্বাচনী প্রচারের ডঙ্কা বাজিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বললেন, হিন্দু আর হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে পার্থক্য আছে। মহাত্মা গান্ধী হিন্দু আর গডসে হিন্দুত্ববাদী। প্রকৃত হিন্দু বনাম হিন্দুত্ববাদী। আগামী দিনে যে বিজেপির বিরুদ্ধে এই লাইনেই এগোতে চলেছে কংগ্রেস, আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন রাহুল।
রাজস্থানের জনসভায় কংগ্রেস নেতা বললেন, দেশে ২০১৪ থেকে হিন্দুত্ববাদীদের শাসন চলছে। ওদের সরাতে হবে। ওদের সরিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে হবে হিন্দুদের শাসন। এ দেশের হিন্দুদের জাগাতে হবে। হিন্দুদের দমিয়ে রাখা যাবে না। ৩ হাজার বছরেও রাখা যায়নি। এই দেশ হিন্দুদের দেশ, হিন্দুত্ববাদীদের দেশ নয়। আজ এই দেশের সব দুর্দশার কারণ হিন্দুত্ববাদীরা।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি এদিন রাজস্থানের ‘মূল্যবৃদ্ধি হটাও’ জনসভায় গীতা, উপনিষদের বুলিও আওড়েছেন। রাহুল বলে দিয়েছেন, হিন্দু ধর্ম কখনও অবহেলিতকে আক্রমণ করার শিক্ষা দেয় না। দরিদ্রকে মেরে ফেলার শিক্ষা দেয় না। কংগ্রেস নেতা দাবি করেছেন, ভারতে আজ ছদ্ম হিন্দুত্ববাদী, মিথ্যা হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে প্রকৃত হিন্দুদের লড়াই চলছে।
রাহুলের বক্তব্য, হিন্দু আর হিন্দুত্ববাদী আলাদা। এদের মানে আলাদা। আমি হিন্দু, কিন্তু হিন্দুত্ববাদী নই। আপনারা সবাই হিন্দু কিন্তু হিন্দুত্ববাদী নন। মহত্মা গান্ধী হিন্দু, কিন্তু গডসে হিন্দুত্ববাদী। এদের মধ্যে পার্থক্য কী জানেন, পরিস্থিতি যেমনই হোক, হিন্দুরা সত্যের সঙ্গে থাকে। হিন্দুদের রাস্তা সত্যাগ্রহ। আর হিন্দুত্ববাদীরা খোঁজে ক্ষমতা। সত্যের সঙ্গে ওদের কোনও সম্পর্ক নেই। হিন্দুরা ভয়কে জয় করার জন্য লড়াই করে। আর হিন্দুত্ববাদীরা ভয় পেলে নুইয়ে যায়।
মজার কথা হল মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী জনসভা থেকে রাহুল মূল্যবৃদ্ধি নিয়া যত না বাক্যব্যয় করেছেন, তার থেকে অনেক বেশি বাক্যব্যয় করেছেন হিন্দু বনাম হিন্দুত্ববাদী লড়াই নিয়ে। রাহুলের এদিনের বক্তব্যেই স্পষ্ট, আগামী দিনে বিজেপির হিন্দুত্ববাদকে অস্ত্র করেই বিজেপিকে বিঁধতে চাইছেন তিনি। তবে উনিশের আগে যে নরম হিন্দুত্বের পন্থা কংগ্রেস নিয়েছিল, চব্বিশের আগে রাহুলের হিন্দুত্ব তার থেকে অনেক বেশি আগ্রাসী হতে চলেছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার রাজস্থানে মুল্যবৃদ্ধি হাঁটানোর দাবিতে কংগ্রেস যে মেগা জনসভার আয়োজন করেছিল, তাতে দীর্ঘদিন বাদে একসঙ্গে মঞ্চে দেখা গিয়েছে রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। সেই সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা, অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারাও। এই মঞ্চ থেকেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘ট্যুরিস্ট প্রধানমন্ত্রী’ বলে তোপ দেগেছেন।
Be the first to comment